সুতাং নদী, নদীতো নয় যেনো বর্জ্য নিষ্কাশনের নালা
দূষিত শিল্প বর্জ্যে ধ্বংসের পথে সুতাং নদী, বিলুপ্তির পথে দেশী প্রজাতির মাছ
হবিগঞ্জ সংবাদদাতা
হবিগঞ্জ জেলার ইতিহাস ঐতিহ্য সুতাং নদী। এক সময় এ নদীর ছিল খরশ্রুতা নদী নাম পরিচত। পরর্বিতে সুতাং নদী হিসেবে সর্ব মহলে পরিচিতি লাভ করে। এ নদীর উৎপত্তি স্থান ভারতের আগরতলা। আর এই আগরতলা নদীটি হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা সীমান্ত থেকে বয়ে আসা এই সুতাং নদী চুনারুঘাট হয়ে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা ঘেঁষে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম হয়ে লাখাই উপজেলার পূর্ব ও বুল্লা ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত সুতাং নদী ধলেশ্বরী নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। বিগত কয়েক বছর পূর্বে মাধবপুর ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় প্রাণ আরএফএল কোম্পানির দূষিত শিল্প বর্জ্যের পানি নেমে আসা অব্যাহত শিল্প বর্জ্যে দূষিত হয়ে সুতাং নদী এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। সোনালী ফসলের বীজ তলা তৈরিতে খরতাপে কৃষক। যে নদীর পানি দিয়ে তৃষ্ণা মিঠাত সেই সুতাং নদীর পানি আজ বিষাক্ত। সুতাং নদীর পানি বর্তমানে এমন পর্যায়ে পৌঁছিয়েছ সুতাং নদীর পানি পান বা ব্যবহার করলে কৃষক ও সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। নদী পাড়ের মানুষ গোসল সহ প্রাত্যহিক বিভিন্ন কাজে সুতাং নদীর পানি ব্যবহার করতেন।কিন্তু বর্তমানে সুতাং নদীর পানি এমনই রুপ ধারণ করছে তা ব্যবহার করা তো দূরের কথা দুর্গন্ধের কারণে নদীর পাড় দিয়ে চলাচল করাই কষ্টসাধ্য হয়ে উঠেছে। সুতাং নদীতে থাকা দেশীয় প্রজাতির মাছ প্রায় বিলুপ্তির পথে।সুতাং নদীর পানির দূর্গন্ধে অতিষ্ঠ লাখাই উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম,হাট- বাজার ও নদী পাড়ের মানুষ। লাখাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বুল্লা বাজারের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সুতাং নদী,সুতাং নদীর পানির দুর্গন্ধে বাজারে ক্রেতা- বিক্রেতার হার অনেক কমে গেছে। সুতাং নদীর পাশেই অবস্থিত বুল্লা বাজার জামে মসজিদ, মসজিদের মুসুল্লিরা প্রতি ওয়াক্তেই বুল্লা বাজারের নৌকা ঘাটে ওযু করতেন সুতাং নদীর পানি দিয়ে, কিন্তু এখন আর ওযু করা যায় না পানির দুর্গন্ধের কারণে।
এলাকাবাসীর সাথে আলাপ করে জানা যায়,মাধবপুর ও শায়েস্তাগঞ্জে স্থাপিত কলকারখানার বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ সুতাং নদীতে ছেড়ে দেওয়ায় সুতাং নদীর পানির রং ভিন্ন আকার ধারণ করেছে ফলে দুর্গন্ধের কারণে নদী পাড়ের মানুষ গৃহস্থালি কাজে নদীর পানি ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছেন,এমনকি গরু ছাগলও এ পানি পান করতে পারছেন না।
আরও জানা যায় পানি দূষণের মাত্রা এতটাই প্রকট আকার ধারন করছে যে,গত কয়েক মাসের মধ্যে দূষিত পানির রুপ আর বদলায় নি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত উজান থেকে নেমে আসা কল কারখানার অপরিশোধিত বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে সুতাং নদী।সুতাং নদীর কালো পানি বীজ তলায় দেওয়ার কারণে ধানের চারা প্রয়োজনীয় খাবার গ্রহণ করতে পারছে না,এতে ধান গাছে অপুষ্টি দেখার সম্ভাবনা রয়েছে,
বৃহত্তর স্বার্থে সুতাং নদী কে শিল্প বর্জ্যের হাত থেকে রক্ষা করার দাবী এলাকাবাসীর।