কোটাবিরোধী আন্দোলন
* কোটাবিরোধী আন্দোলনঃ-
মুক্তিযুদ্ধের ৫৩ বছর পরে এসেও বৈষম্য পক্ষপাতদুষ্টতার নানামুখী অবয়বে নাকাল স্বদেশ। গাজী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তিন প্রজন্ম একচেটিয়া সুযোগ সুবিধার মঞ্চে, দুর্ভাগ্যপিড়ীত পরীব স্বদেশ আমার। এবার তো থামতে হবে, কোটা বাতিল বা সংশোধন করে যোগ্যতার পরিমাণ সমতা নিয়ে দক্ষ জনশক্তি এবং সকলের সমান সাম্যতা এখন সময়ের দাবি। স্মরণ রাখা চাই যে, ত্রিশ লক্ষ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এ হিসেবের বাহিরে, বিশেষ দিনে শহীদ বেদীতে ফুল দিয়ে কিছু হতভাগা গানের কলিতে সুর মিলিয়েই সারা। শহীদদের কোনো প্রাপ্তি নেই। শুধু গাজী মুক্তিযোদ্ধাদের রমরমা সাত পুরুষের খাই খাই। আমা স্বদেশ আমার। হায় স্বদেশের রাজনীতি।
***সম্প্রতি সামনে এসেছে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে প্রশ্ন ফাঁস জালিয়াতি ও ড্রাইভার আবেদ আলী। যেসব ক্যাডার আমলারা প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জালিয়াতি করে আমলা বনে গিয়ে দেশের খোদা হওয়ার দত জঘন্য অহংবোধ ও অসভ্য আচরণ এবং জনগণের সম্পদ লুটতরাজে জড়িত তাদের খুঁজে বের করে শান্তির মুখোমুখি করা জরুরী। আমলারা দেশের একনিষ্ঠ কামলা। কারণ জনগণের কষ্টের টাকায় তাদের আরাম আয়েশ গাড়ি বাড়ির বিলাসী জীবন চলে। জনগণের খোদা হওয়ার দুঃসাহস তারা পায় কোন শিক্ষা থেকে। তাদের ভিআইপি পাসপোর্ট বাতিল করে জনগণের কাতারে সাধারণ পাসপোর্টে সমতা বিধান করতে হবে। ভিআইপি হবে যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত এমপি মন্ত্রী বিচারপতি, বড় বড় ব্যবসায়ী, শিল্প কারখানার মালিক, যাঁরা দেশের উন্নয়নে অবদান রেখে চলেছে এবং বৈদিশিক কূটনীতিকরা।
** চলমান জেনারেল শিক্ষা ব্যবস্থঃ
* অদক্ষ জনশক্তি দেশের সম্পদ না হয়ে দেশের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর প্রধান কারণ অবাজন জেনারেল শিক্ষা ব্যবস্থা। গণচীনে দক্ষ জনশক্তি তৈরীর লক্ষ্যে সাধারণ শিক্ষা মানবিক ও ব্যবসায় অনার্স মাষ্টার্স বিলোপ বা স্থগিত করা হয়েছে প্রায় বিশ বছর আগে। উচ্চে মাধ্যমিকের পরে অনার্স মাস্টার্সের নামে মানহীন মানবিক ব্যবসায় ও ব্যঙের ছাতার মত গজে উঠা অদক্ষ বিবিএ এমবিএ শিক্ষার নামে যাতাহ যবরল শিখে পাস করে চাকুরির পিছে দৌঁড়ে হয়রান অদক্ষ বিশাল এক কাফেলা, যাদের চকচকে হ্যান্ডসাম চোখে মুখে কলমের ডাকাতি চিটারী বাটপারী। কারণ আশেপাশের প্রাচুর্যের প্রতিযোগীতা তার উপর দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজার। তাকে টিকে থাকতে হবে তার লালায়িত বিলাসী স্বপ্নের সামনে। কিন্তু তার কাছে ক্রিয়েটিভ কিছুই নেই। সে বিজ্ঞানের কিছুই জানে না। সে তো জালিয়াতি করবেই। তাই ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারদের মত ক্রিয়েটিভ শিক্ষায় শিক্ষিত জনশক্তি চাই। শিক্ষা হতে হবে একমুখী শুধুই বিজ্ঞান ও কারিগরী। তবেই জনসংখ্যার উর্ধ্বগতিতে দেশ হবে লাভবান, বিশ্বের দরবারে পাবে সম্মান। দক্ষ জনশক্তি হবে জনসম্পদে। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার ও কারিগরী শিক্ষিতরাই সর্বত্র নেতৃত্ব দিবে। যেমন বিজ্ঞানের ছাত্রই হবেন একজন প্রশাসন ক্যাডার আমলা, ব্যাংকার অথবা পুলিশ ক্যাডার। তাহলে তাকে অদক্ষ হাতে কলমের খোঁচায় চুরি করতে হবে না। অথবা চাকুরী চলে যাওয়ার ভয়ে হীনমন্যতায় ভূগতে হবে না। কারণ সেতো হাতে কলমে শিক্ষিত একজন বিজ্ঞানের ছাত্র। দেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধি আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না। সুতরাং শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে সর্বত্র বিজ্ঞান শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিয়ে একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা। নৈতিকতা ও ধর্ম এই শিক্ষা ব্যবস্থার মূলে জীবনঘনিষ্ঠ সততার ঢাল হিসেবে অবশ্যই থাকবে। কারণ ধর্মহীন মানুষ পশুর চেয়েও নরাধম, মনিষীদের বাণীতে।
*** এনবিআরের তুঘলকি কান্ডঃ
সম্প্রতি উম্মোচিত হয়েছে এনবিআরের বড়কর্তা মাফিয়া মতিউরের ছেলের ১৫ লাখের ছাগলকান্ড।
জনগণের বর্ধিত করের লাভের গুড় খেয়ে সাবাড় করে এনবিআর, অর্থ মন্ত্রণালয়ের চোখে ধুলো দিয়ে। বাজেটের সিংহভাগ পূরণের দায়িত্ব নির্বাহ করে এনবিআর। এই সুযোগে অর্থথমন্ত্রণালয়কে ভুল পরামর্শ দিয়ে বছর বছর কর বাড়ায় এনবিআর। এর মাধ্যমে নিজেদের আখের গোছাতে লুটতরাজের সুযোগ তৈরী করে এনবিআর। সরকারের প্রতি আকুল অনুরোধ জনগণের প্রতি জুলুমের কর বাড়াবেন না। এনবিআরকে ডাকাতির সুযোগ দেবেন না। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনগণের নাভিশ্বাস চরমে। এনবিআর ও প্রশাসন ক্যাডারের স্বৈরাচারী লুটের কারণে সরকারের ব্যাপক উন্নয়ন যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয়,সেটাই আকুল প্রত্যাশা।
*** শিক্ষানবীশ বেকার ভাতা:
মধুর ছাত্রজীবন অভাব বেদনার গ্লানিতে প্রিয়মান। স্কুল কলেজ পড়ুয়া এখনও ৭৫% প্রায় নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। বয়োসন্ধিঃ ও বন্ধুবৎসল খেলাধুলাময় আনন্দের এ সময়। অধুনা সময়ে সর্বত্রই সরকারের সহযোগীতার হাতছানি লক্ষ্যনীয়। বালতির ফুটো দিয়ে উন্নয়ন বেরিয়ে যায়। অভাবের করালগ্রাসে তৈরী হয় কিশোর সন্ত্রাস হীনমন্যতা ও দেশপ্রেমহীনতা। দেখা গেছে, কষ্ট করে বড় হওয়া ব্যক্তিগুলো বেশিরভাগ ই চরম স্বার্থপর। স্বপ্নভাঙার দারিদ্রপিড়ীত এমন শিক্ষিত সমাজ, চেয়ারে সমাসীন হবার পরে আর মানতাৰোধ ও দেশাত্ববোধ মনে রাখতে পারে না। কারণ ছাত্রজীবনে সে ছোটা ছোট প্রয়োজনগুলো মেটাতে অক্ষম ছিল। কেউ এগিয়ে আসেনি। না সরকার না প্রতিবেশী। এমতাবস্থায় কেউ বড় দিলের হয়না। প্রশ্ন রাখে, তখন দেশ আমাকে দেয়নি তো আমি কেন দেব। এখন সচিব আমলা হয়ে লুটতরাজ ডাকাতি। তাই বেকার ভাতা জরুরী। উন্নয়নের নামে কত হাজার হাজার কোটি লোপাট পুনঃ পুনঃ বাজেটে, উন্নয়নের চোরাবালিতে কত হাজার কোটি হারিয়ে যায়। অথচ মাত্র হাজার কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দে উঠতি ছাত্রজনগোষ্ঠিকে দেশপ্রেমিক দেশের প্রতি কমিটেড করে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে। এতে করে রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তি বন্ধ হবে। বন্ধ হবে স্ব্যার্থপরতার করালগ্রাসে গড়া মানবতাহীন দুশ্চিন্তাগ্রন্থ প্রজন্ম। পরামর্শ স্বরূপঃ নবম শ্রেণী থেকে অনার্স পর্যন্ত প্রতি মাসে পাঁচশত অথবা তার কমবেশী দিয়ে শুরু করা যেতে পারে। সরকারের নির্বাহীবিভাগ বিষয়টি আন্তরিকভাবে ভেবে দেখবে। কারণ তখন ছাত্রদের কাছে চুল কাটানোর পয়সাও বেশিরভাগ পরিবারের থাকে না। আর তখন অপরিপক্ক ফলে মাকাল টিউশনি ইারেন্স দলাদলি ও নানা বিপথে চলে যায়, অপরিহার্য চার/পাঁচশত টাকার জন্য। সরকারের ব্যাজেটে এমন হাজার ক্যোট বরাদ্দ, দেশের উন্নয়নে যতনে বেড়ে তুলবে একটি কমিটেড দেশপ্রেমিক জাতি। দেশ আমাকে দিয়েছে তো আমি কেন দেশকে দেবনা। এগুলো সুক্ষ্ম কিন্তু চরম বাস্তবতা নিম্নমধ্যবিত্ত সন্তানদের জন্য। এমন কমিটেড সোনার মানুষদের দিয়েই গড়ে উঠবে সুখী সমৃদ্ধ মানবতাময় সোনালী স্বদেশ, মাছে ভাতে বাঙালীর কৃষাণমাঝির বাংলাদেশ। চরম ক্ষুধাতেও যাঁরা একটুকু রুটি সকলে মিলে ভাগাভাগি করে খাবে আর কোরাস সুরে গাইবে, “সবার সুখ হাসবো মোরা কাঁদবো সবার দুখে, নিজের খাবার বিলিয়ে দেবো অনাহারীর মুখে।