ঢাকা ০৩:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জমে উঠেছে চাঁদপুরের ৪০ বছরের পুরনো সফরমা‌লি গরুর হাট

পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে চাঁদপুরে জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী সফরমালী পশুর হাট। বিগত প্রায় ৪০ বছর যাবৎ সদর উপ‌জেলার বিষ্ণুপুর ইউ‌নিয়নের সফরমালী বাজারে সপ্তাহের প্রতি সোমবার নিয়মিত এ পশুর হাট‌ বসছে। যেখানে চাঁদপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে বেপারী, খামারী ও গৃহস্থরা তাদের গরু ও ছাগল নিয়ে হাজির হন। ফলে সাপ্তাহিক এই হাট ক্রেতা-বিক্রেতার মিলনমেলায় পরিনত হয়। কোরবানির ঈদ এলে যা কয়েক গুনে বেড়ে যায়।

অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও কোরবা‌নি‌ ঈদকে সামনে রেখে জমজমাট হয়ে উঠছে সফরমালি পশুরহাট। ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে ক্রেতা বিক্রেতাদের হাঁক ডাকে মুখরিত হয়ে উঠছে পুরো সফলমালি এলাকা। হাটে পর্যাপ্ত গরু-ছাগল দেখা গেলেও ঈদ আসতে এখনো প্রায় ১০/১১ দিন বাকি থাকায় বিক্রি তেমন একটা হচ্ছে না, বলে জানান আগত খামারি এবং গৃহস্থরা। তবে বিক্রেতা এবং আয়োজকরা মনে করছেন ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বেচা বিক্রিও বেড়ে যাবে।
হাটে গরু কিন‌তে আসা এক ক্রেতা বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে ‌এ হাট থেকে আমরা কোরবানির গরু কিনছি। তাই এবারও এলাম। হাটে পর্যাপ্ত গরু রয়েছে। তবে দাম কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে।
শহরের চেয়ারম্যান ঘাট এলাকার জাকির হোসেন বলেন, ঈদ অসতে আরো অনেক দিন বাকি আছে। তাই পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে আজকে হাটে গরু দেখতে আসছি।এই হাট অনেক বড় হওয়া এখানে বিভিন্ন দাম এবং সাইজের গরু পাওয়া যায়। তিনি হাটের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করেন।
হাটের ভেতরের শৃঙ্খলা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও আশপাশের বিশৃঙ্খলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন, শহরের পালবাজার থেকে আসা গোলাম মাওলা নামে একজন ক্রেতা। তিনি জানান প্রায় ১৫/২০ বছর যাবৎ আমি এই হাট থেকে কোরবানির গরু কিনছি।
পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুর জেলা থেকে আসা খামারী তসলিম মিয়া বলেন, অনেক বছর ধরে আমি এই হাটে গরু নিয়ে আসছি। এবার ১০‌টি গরু এনেছি। সকা‌লে একটি বি‌ক্রি হয়েছে। এখ‌নও ৯টি আছে। আশা করছি ঈদের কয়েকদিন আগেই আমার সব গরু বিক্রি হয়ে যাবে।

সফরমালী হাটের প‌রিচালক মোহাম্মদ আজিজ খান জানান, চাঁদপুর এবং পার্শ্ববর্তী জেলাতেও সফলমালি হাটের ঐতিহ্য ও সুনাম রয়েছে। এর অন্যতম কারণ হলো এখানে বাজার ব্যবস্থাপনা, শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা এবং হাসিল একেবারেই কম রাখা। আমরা প্রতিটি গ্রু থেকে মাত্র ৬০০ টাকা হাসিল রাখছি। যা অন্যান্য সময়ে ৪০০ টাকা রাখা হয়। এ বছর আমরা পুরো হাট এলাকা একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরার দ্বারা নিয়ন্ত্রন করছি। আমাদের নিজস্ব ভলান্টিয়ারদের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং এলাকাবাসী আমাদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন।
সফরমালী বাজা‌র ক‌মি‌টির সভাপ‌তি ও হাট প‌রিচালনাকারী আব্দুল আ‌জিজ খান দুদু জানান, এটি মূলত আমাদের পা‌রিবা‌রিক বাজার। প্রায় ৪০ বছর ধ‌রে গরুর হাট বসে এখানে। হাট‌টি‌ থে‌কে আ‌য়ের বেশীর ভাগ টাকা মস‌জিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ বি‌ভিন্ন দাতব্য কাজে ব্যায় করা হয়ে থা‌কে।
উল্লেখ্য : চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে এবারের ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য চাঁদপুরে ৬২ হাজার ৯৮পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলায় চাহিদা রয়েছে ৭৬ হাজার পশু। এতে দাপ্তরিক হিসেবে পশুর সংকট থাকবে ১৪ হাজার। তবে আশপাশের জেলার পশু হাটে উঠলে এই সংকট থাকবে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

গোয়াইনঘাটে বালুর স্তূপ থেকে চাঁদাবাজি: তদন্তের দাবি

জমে উঠেছে চাঁদপুরের ৪০ বছরের পুরনো সফরমা‌লি গরুর হাট

আপডেট সময় ০৪:০৪:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে চাঁদপুরে জমে উঠেছে ঐতিহ্যবাহী সফরমালী পশুর হাট। বিগত প্রায় ৪০ বছর যাবৎ সদর উপ‌জেলার বিষ্ণুপুর ইউ‌নিয়নের সফরমালী বাজারে সপ্তাহের প্রতি সোমবার নিয়মিত এ পশুর হাট‌ বসছে। যেখানে চাঁদপুর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে বেপারী, খামারী ও গৃহস্থরা তাদের গরু ও ছাগল নিয়ে হাজির হন। ফলে সাপ্তাহিক এই হাট ক্রেতা-বিক্রেতার মিলনমেলায় পরিনত হয়। কোরবানির ঈদ এলে যা কয়েক গুনে বেড়ে যায়।

অন্যান্য বছরের ন্যায় এবারও কোরবা‌নি‌ ঈদকে সামনে রেখে জমজমাট হয়ে উঠছে সফরমালি পশুরহাট। ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে ক্রেতা বিক্রেতাদের হাঁক ডাকে মুখরিত হয়ে উঠছে পুরো সফলমালি এলাকা। হাটে পর্যাপ্ত গরু-ছাগল দেখা গেলেও ঈদ আসতে এখনো প্রায় ১০/১১ দিন বাকি থাকায় বিক্রি তেমন একটা হচ্ছে না, বলে জানান আগত খামারি এবং গৃহস্থরা। তবে বিক্রেতা এবং আয়োজকরা মনে করছেন ঈদ ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে বেচা বিক্রিও বেড়ে যাবে।
হাটে গরু কিন‌তে আসা এক ক্রেতা বলেন, বেশ কয়েক বছর ধরে ‌এ হাট থেকে আমরা কোরবানির গরু কিনছি। তাই এবারও এলাম। হাটে পর্যাপ্ত গরু রয়েছে। তবে দাম কিছুটা বেশি মনে হচ্ছে।
শহরের চেয়ারম্যান ঘাট এলাকার জাকির হোসেন বলেন, ঈদ অসতে আরো অনেক দিন বাকি আছে। তাই পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে আজকে হাটে গরু দেখতে আসছি।এই হাট অনেক বড় হওয়া এখানে বিভিন্ন দাম এবং সাইজের গরু পাওয়া যায়। তিনি হাটের সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার প্রশংসা করেন।
হাটের ভেতরের শৃঙ্খলা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করলেও আশপাশের বিশৃঙ্খলা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন, শহরের পালবাজার থেকে আসা গোলাম মাওলা নামে একজন ক্রেতা। তিনি জানান প্রায় ১৫/২০ বছর যাবৎ আমি এই হাট থেকে কোরবানির গরু কিনছি।
পার্শ্ববর্তী শরীয়তপুর জেলা থেকে আসা খামারী তসলিম মিয়া বলেন, অনেক বছর ধরে আমি এই হাটে গরু নিয়ে আসছি। এবার ১০‌টি গরু এনেছি। সকা‌লে একটি বি‌ক্রি হয়েছে। এখ‌নও ৯টি আছে। আশা করছি ঈদের কয়েকদিন আগেই আমার সব গরু বিক্রি হয়ে যাবে।

সফরমালী হাটের প‌রিচালক মোহাম্মদ আজিজ খান জানান, চাঁদপুর এবং পার্শ্ববর্তী জেলাতেও সফলমালি হাটের ঐতিহ্য ও সুনাম রয়েছে। এর অন্যতম কারণ হলো এখানে বাজার ব্যবস্থাপনা, শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা এবং হাসিল একেবারেই কম রাখা। আমরা প্রতিটি গ্রু থেকে মাত্র ৬০০ টাকা হাসিল রাখছি। যা অন্যান্য সময়ে ৪০০ টাকা রাখা হয়। এ বছর আমরা পুরো হাট এলাকা একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরার দ্বারা নিয়ন্ত্রন করছি। আমাদের নিজস্ব ভলান্টিয়ারদের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং এলাকাবাসী আমাদেরকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছেন।
সফরমালী বাজা‌র ক‌মি‌টির সভাপ‌তি ও হাট প‌রিচালনাকারী আব্দুল আ‌জিজ খান দুদু জানান, এটি মূলত আমাদের পা‌রিবা‌রিক বাজার। প্রায় ৪০ বছর ধ‌রে গরুর হাট বসে এখানে। হাট‌টি‌ থে‌কে আ‌য়ের বেশীর ভাগ টাকা মস‌জিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানাসহ বি‌ভিন্ন দাতব্য কাজে ব্যায় করা হয়ে থা‌কে।
উল্লেখ্য : চাঁদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে এবারের ঈদুল আজহায় কোরবানির জন্য চাঁদপুরে ৬২ হাজার ৯৮পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলায় চাহিদা রয়েছে ৭৬ হাজার পশু। এতে দাপ্তরিক হিসেবে পশুর সংকট থাকবে ১৪ হাজার। তবে আশপাশের জেলার পশু হাটে উঠলে এই সংকট থাকবে না বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471