মোল্লাহাট (বাগেরহাট) প্রতিনিধিঃ
বাগেরহাটের মোল্লাহাট উপজেলা আজ মাদক কারবারি ও মাদকসেবীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামেই এখন মাদকের ছায়া বিস্তৃত। এই পরিস্থিতির কারণে চুরি, ছিনতাই, ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড অতীতের চেয়ে অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। হতাশা ও ভয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন নিরীহ এলাকাবাসী।
বিশেষ করে কামারগ্রাম, ঘোষগাতী, কুলিয়া, বড়ঘাট, নাশুখালী, চুনখোলা, গাংনী ও নগরকান্দী গ্রামের বাসিন্দারা সরাসরি অভিযোগ করেছেন, এসব এলাকায় মাদকের অবাধ লেনদেন চলছে দিনের পর দিন। এছাড়াও ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের পাশে থাকা বেশ কিছু দোকানে প্রকাশ্যে মাদক কেনাবেচা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, দীর্ঘদিন ধরে থানা পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য মাদক কারবারিদের কাছ থেকে নিয়মিত অর্থ ও সুবিধা গ্রহণ করে আসছে। ফলে প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে নির্বিঘ্নে চলতে পারছে এই সমাজবিধ্বংসী কার্যক্রম। এ বিষয়ে কথা বললে অনেকেই ভয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থাকেন।
এলাকার একজন সচেতন নাগরিক বলেন, “যে হারে মাদক বিস্তার লাভ করছে, তা থামানো না গেলে আগামী প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে। পুলিশের কিছু দুর্নীতিবাজ সদস্যের সহযোগিতায় মাদক ব্যবসা দিন দিন জোরদার হচ্ছে।”
অপর একজন অভিভাবক বলেন, “আমার ছেলেকে মাদকের ফাঁদ থেকে বাঁচাতে আমি অনেক চেষ্টা করেছি, কিন্তু চারপাশে যখন সবাই আসক্ত, তখন একজনের পক্ষে লড়া কঠিন হয়ে পড়ে।”
আটজুড়ী ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর মোল্লা জানান, মাদক ও চুরির বিরুদ্ধে স্থানীয়দের নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে আগামী মঙ্গলবার সভা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
এ অবস্থায় এলাকাবাসী ও সচেতন মহল দ্রুত মোল্লাহাট উপজেলাকে মাদকমুক্ত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
থানা অফিসার ইনচার্জ মোঃ ফজলুল হক বলেন, বিরাজমান পরিস্থিতিতে প্রতিনিয়ত মাদক বিরোধী অভিযানের মাধ্যমে মাদক কারবারি ও সেবনকারীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে আরো জোরদার অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। মাদক ব্যবসায়ী ও সেবনকারীদের বিষয়ে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার অনুরোধ করে ওসি আরো বলেন, মাদক সংক্রান্তে কোন পুলিশ সদস্যের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।