দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ১১নং মরিচা ইউনিয়নের ঝারমাড়া গ্রামের একমাত্র চলাচলের রাস্তা কেটে ফেলায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীসহ ১০টি পরিবার। চলাচলের একমাত্র ভরসা
সোমবার (২৩ জুন) দুপুরে এই রাস্তাটি বন্ধ করে দেওয়ার প্রতিবাদে এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। মানববন্ধনে নারী-পুরুষ, শিক্ষার্থী, কৃষক, বৃদ্ধসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। তারা অভিযোগ করেন, প্রায় এক শতাব্দী ধরে ঝারমাড়া গ্রামের মানুষজন যে রাস্তা দিয়ে কৃষিকাজ, পণ্য পরিবহন এবং বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে আসছিলেন, সেটিই সম্প্রতি এক প্রভাবশালী ব্যক্তি জোরপূর্বক কেটে ফেলেছেন। এতে এলাকাবাসী কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মরিচা ইউনিয়নের ঝারমাড়া গ্রামের পাশে থাকা এই প্রাচীন পথটি রাতের আঁধারে পেশিশক্তির মাধ্যমে কেটে ফেলেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী বাচ্চু মিয়া। এতে শিক্ষার্থী, রোগী ও বৃদ্ধদের চলাচল একপ্রকার সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দিতে গিয়ে এলাকার বাসিন্দা মাইকো হেমরম বলেন, গরিব মানুষ। আমাদের একমাত্র চলাচলের রাস্তা কেটে নেওয়া হলো। আমাদের প্রশ্ন এই দেশে কি আমাদের কোনো অধিকার নেই?
একইভাবে শিক্ষার্থী বিউটি সরেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমাদের এই এলাকায় অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে। আমরা প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে স্কুলে যেতাম। কিন্তু বর্তমানে রাস্তাটি কেটে ফেলার কারণে অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাস্তাটি কেটে ফেলার কারণে বর্ষাকালে আমাদের স্কুলে যেতে অনেক কষ্ট হয় ।
একই এলাকার কৃষক তুনু সরেন বলেন, আমাদের ধান, ভুট্টা সব এই রাস্তা দিয়ে বাজারে নিয়ে যেতাম। এখন মাথায় তুলে কাটা ও ভাঙ্গা রাস্তা দিয়ে যেতে হয়। যার ফলে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। সেই সাথে বর্ষাকালে কোন যানবাহন চলাচল করতে পারে না।
স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মোঃ আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, রাতের আঁধারে বাচ্চু মিয়া রাস্তাটি কেটে ফেলেন। এতে কৃষিপণ্য পরিবহন, রোগী নেওয়া ও শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। বিকল্প পথ দুর্গম হওয়ায় প্রতিদিনই দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হচ্ছে।
স্থানীয়দের মধ্যে মোঃ শাহজাহান আলী বলেন, এই রাস্তা ছাড়া তাদের কোনো বিকল্প পথ নেই। সরাসরি উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ ছাড়া সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় বলেও দাবি করেন তারা। অবিলম্বে রাস্তাটি পুনরায় চলাচলের উপযোগী করে দেওয়ার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।