আসন্ন ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার ঐতিহাসিক গরুর হাট। মঙ্গলবার (৩ জুন) হাটজুড়ে গরু ও ছাগলের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ করা গেছে। তবে অতিরিক্ত সরবরাহের বিপরীতে পশুর দামে দেখা গেছে নানা অসংগতি—ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয় পক্ষই একে অপরের প্রতি দায় চাপাচ্ছেন।
স্থানীয় প্রশাসন ও হাট সংশ্লিষ্টদের মতে, এবার হাটে চাহিদার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ পশু উঠেছে। কিন্তু সরবরাহ বেশি থাকলেও বাজারমূল্য নিয়ে চলছে নানা অভিযোগ।
নওগাঁ থেকে আগত এক বিক্রেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এবার গরুর সংখ্যা অনেক বেশি, কিন্তু ক্রেতা তেমন নেই। আমরা দামে সন্তুষ্ট নই।”
অন্যদিকে, এক ক্রেতার অভিযোগ, “পশু বেশি হলেও দাম কমছে না। বরং অনেক বিক্রেতা অতিরিক্ত দাম হাঁকাচ্ছেন। হাটে যেন কোনো মূল্য সমন্বয় নেই।”
বিক্রেতাদের একাংশের দাবি, দালালদের কারণে প্রকৃত দাম পাওয়া যাচ্ছে না। “সকাল থেকে গরু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি, কেউ ঠিকমতো দাম বলছে না,” বললেন এক হতাশ বিক্রেতা।
অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, “যেখানে অতিরিক্ত পশু এসেছে, সেখানে দাম কমার কথা। কিন্তু বাস্তবে উল্টো চিত্র। এটা অস্বাভাবিক।”
ছাগলের বাজারেও ছিল একই পরিস্থিতি। অনেক বিক্রেতা জানাচ্ছেন, খরচ তুলতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। “লাভ তো হচ্ছেই না, এখন মনে হচ্ছে ক্ষতির মুখে পড়ব,” বলেন এক স্থানীয় বিক্রেতা।
নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা জোরদার হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাঁচবিবি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মইনুল ইসলাম জানান, “বৃহত্তর ঈদের শেষ হাট হওয়ায় পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। বিশেষভাবে জাল টাকা প্রতিরোধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
এছাড়াও, পশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় মাঠে রয়েছে মেডিকেল টিম। পাঁচবিবি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেন, “পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে আমরা ক্রমাগত কাজ করছি।”
হাট পরিদর্শন শেষে পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রোমানা রিয়াজ বলেন, “এবার গরুর সরবরাহ রেকর্ড সংখ্যক। হাটে স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা ও সার্বিক নজরদারিতে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।”