ঢাকা ১২:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিলেটে পাথর কুয়ারি ও ক্রাশার মিল বন্ধ: খেটে খাওয়া মানুষের পেটে লাথি

আজ বৃহত্তর সিলেটের খনিজ অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে থাকা পাথর কুয়ারি ও শতাধিক ক্রাশার মিল হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া এবং বেশ কিছু স্থানে মেশিন ভেঙে ফেলার ঘটনায় চরম হতাশা ও ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয় শ্রমিক ও পাথর ব্যবসায়ীসহ হাজারো খেটে খাওয়া মানুষ।

সকাল থেকেই গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও বিয়ানীবাজার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাথর উত্তোলন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহৃত মিল ও যন্ত্রপাতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর একযোগে কিছু স্থানে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু ক্রাশার মেশিন ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দিনমজুর, শ্রমিক, ট্রাক-ড্রাইভার, লেবার, হেলপার, স্যান্ড-স্টোন ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় বাজার নির্ভরশীল পরিবারগুলো। আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের পরিবারে নেমে এসেছে চরম অনিশ্চয়তা।

স্থানীয় পুরুষ শ্রমিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“পেটের দায়ে পাথরের কাজ করি। আজ হঠাৎ বিদ্যুৎ বন্ধ, মিল বন্ধ, কিছু জায়গায় আবার ভাঙচুর—এভাবে চললে আমরা খাব কী? আমাদের দোষ কী?”

আরেক নারী শ্রমিক বলেন,
“ছেলেমেয়েদের স্কুলের ফি, বাজারের খরচ—সব বন্ধ হয়ে গেল। সরকার কি একবারও ভাবছে, গরিবের ঘরে আগুন লাগে কীভাবে?”

স্থানীয়দের মতে, পরিবেশ সুরক্ষা ও কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে এভাবে হঠাৎ অভিযান চালানো এবং জীবন জীবিকার পথ এক ধাক্কায় বন্ধ করে দেওয়া কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। অনেকেই বলছেন, বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে সকল কুয়ারি বন্ধ করে দেওয়ার ফলে অসংখ্য নির্ভরশীল পরিবার পথে বসবে।

কয়েকজন পাথর ব্যবসায়ী বলেন,
“সরকারি নিয়ম মেনে কাজ করছি। হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বন্ধ করা ও মেশিন ভাঙা—এটা তো বিনিয়োগের উপর আঘাত। ক্ষতিপূরণ কে দেবে?”

স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদিও বলা হয়েছে, পরিবেশবিরোধী ও অবৈধ কার্যক্রম রোধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তবে নিরীহ খেটে খাওয়া মানুষের জীবিকা বন্ধ করে দিয়ে যদি পরিবেশ রক্ষা হয়—তাহলে প্রশ্ন উঠছে, মানুষ বাঁচবে না পরিবেশ?

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই লিখছেন, “পরিবেশ বাঁচাতে গিয়ে যেন পেট না মরে।”

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

গাইবান্ধা সদরে কাজী শামছুলের বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহ রেজিস্ট্রিরির অভিযোগ-তদন্তের দাবী

সিলেটে পাথর কুয়ারি ও ক্রাশার মিল বন্ধ: খেটে খাওয়া মানুষের পেটে লাথি

আপডেট সময় ০৭:৪৪:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫

আজ বৃহত্তর সিলেটের খনিজ অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে থাকা পাথর কুয়ারি ও শতাধিক ক্রাশার মিল হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া এবং বেশ কিছু স্থানে মেশিন ভেঙে ফেলার ঘটনায় চরম হতাশা ও ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন স্থানীয় শ্রমিক ও পাথর ব্যবসায়ীসহ হাজারো খেটে খাওয়া মানুষ।

সকাল থেকেই গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও বিয়ানীবাজার উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পাথর উত্তোলন ও প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহৃত মিল ও যন্ত্রপাতিতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর একযোগে কিছু স্থানে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু ক্রাশার মেশিন ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

এই ঘটনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন দিনমজুর, শ্রমিক, ট্রাক-ড্রাইভার, লেবার, হেলপার, স্যান্ড-স্টোন ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় বাজার নির্ভরশীল পরিবারগুলো। আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের পরিবারে নেমে এসেছে চরম অনিশ্চয়তা।

স্থানীয় পুরুষ শ্রমিক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“পেটের দায়ে পাথরের কাজ করি। আজ হঠাৎ বিদ্যুৎ বন্ধ, মিল বন্ধ, কিছু জায়গায় আবার ভাঙচুর—এভাবে চললে আমরা খাব কী? আমাদের দোষ কী?”

আরেক নারী শ্রমিক বলেন,
“ছেলেমেয়েদের স্কুলের ফি, বাজারের খরচ—সব বন্ধ হয়ে গেল। সরকার কি একবারও ভাবছে, গরিবের ঘরে আগুন লাগে কীভাবে?”

স্থানীয়দের মতে, পরিবেশ সুরক্ষা ও কাগজপত্র যাচাইয়ের নামে এভাবে হঠাৎ অভিযান চালানো এবং জীবন জীবিকার পথ এক ধাক্কায় বন্ধ করে দেওয়া কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। অনেকেই বলছেন, বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে সকল কুয়ারি বন্ধ করে দেওয়ার ফলে অসংখ্য নির্ভরশীল পরিবার পথে বসবে।

কয়েকজন পাথর ব্যবসায়ী বলেন,
“সরকারি নিয়ম মেনে কাজ করছি। হঠাৎ করে বিদ্যুৎ বন্ধ করা ও মেশিন ভাঙা—এটা তো বিনিয়োগের উপর আঘাত। ক্ষতিপূরণ কে দেবে?”

স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যদিও বলা হয়েছে, পরিবেশবিরোধী ও অবৈধ কার্যক্রম রোধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তবে নিরীহ খেটে খাওয়া মানুষের জীবিকা বন্ধ করে দিয়ে যদি পরিবেশ রক্ষা হয়—তাহলে প্রশ্ন উঠছে, মানুষ বাঁচবে না পরিবেশ?

এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই লিখছেন, “পরিবেশ বাঁচাতে গিয়ে যেন পেট না মরে।”


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471