ঢাকা ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৫ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষার্থীহীন মাদ্রাসায় লাখ টাকার বেতন তোলার অভিযোগ

মো. রবিউল ইসলাম, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:
——————————-
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ৬ নং কাশিপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে অবস্থিত কাদিহাট বেগুনবাড়ি দাখিল মাদ্রাসায় নেই কোনো শিক্ষার্থী, নেই নিয়মিত পাঠদানও। তবে কাগজে-কলমে দেখানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি, আর সেই দেখানো তালিকার ভিত্তিতে প্রতি মাসে উত্তোলন করা হচ্ছে লাখ লাখ টাকা বেতন ও ভাতা। এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার সুপার মো. সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

জরাজীর্ণ মাদ্রাসা, নেই পাঠদানের পরিবেশ
স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে মাদ্রাসাটিতে কার্যত কোনো শিক্ষার্থী নেই। শ্রেণিকক্ষগুলো দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত ও জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। এমনকি ছাদের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, তা কোনো সময় ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভুয়া উপস্থাপনা ও অনিয়মের অভিযোগ
সুপার সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি শিক্ষার্থীদের ভুয়া উপস্থিতি দেখিয়ে সরকারি বরাদ্দকৃত বেতন-ভাতা নিয়মিত উত্তোলন করে আসছেন। এছাড়াও ভুয়া ভোটার দিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন, কাগজপত্রে জালিয়াতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

মাদ্রাসার কয়েকজন সাবেক শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এসব অনিয়ম সম্পর্কে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও প্রশাসন থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অভিভাবকদের ক্ষোভ
স্থানীয় অভিভাবক মো. দরমিয়াল ও আমিরু ইসলাম বলেন, “মাদ্রাসাটিতে অনেক ভয়াবহ অবস্থা কোনো ছাত্র নেই। অথচ সুপার প্রতিনিয়ত কাগজে ছাত্র দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিচ্ছেন। আমরা চাই তদন্ত হোক এবং প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক।”

সুপারের বক্তব্য
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সুপার সিরাজুল ইসলাম বলেন, “সব অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মাদ্রাসাটি সচল রয়েছে, কিছু সমস্যা আছে, তবে আমরা তা সমাধানের চেষ্টা করছি।”

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
রাণীশংকৈল উপজেলার সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বেলাল উদ্দিন সরকার বলেন, “ আজ বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটায় তদন্ত অভিযানে আমি দেখি অনেক বিষয়ে গরমিল রয়েছে কি অবস্থা ভালো না। বিষয়টি তদন্তাধীন এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

স্থানীয়দের দাবি
সচেতন এলাকাবাসীর মতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে এই ধরনের দুর্নীতি দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে। তারা দ্রুত তদন্তপূর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

শেষ কথা:
একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘিরে এমন অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ভূমিকা ও দায়িত্ব নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। প্রয়োজন দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত।

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

নতুন রাজনীতি দলের আত্মপ্রকাশ করেন বাংলাদেশ তৃণমূল জনতা দল দলের চেয়ারম্যান

ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষার্থীহীন মাদ্রাসায় লাখ টাকার বেতন তোলার অভিযোগ

আপডেট সময় ১২:২৯:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

মো. রবিউল ইসলাম, রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:
——————————-
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার ৬ নং কাশিপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডে অবস্থিত কাদিহাট বেগুনবাড়ি দাখিল মাদ্রাসায় নেই কোনো শিক্ষার্থী, নেই নিয়মিত পাঠদানও। তবে কাগজে-কলমে দেখানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি, আর সেই দেখানো তালিকার ভিত্তিতে প্রতি মাসে উত্তোলন করা হচ্ছে লাখ লাখ টাকা বেতন ও ভাতা। এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসার সুপার মো. সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

জরাজীর্ণ মাদ্রাসা, নেই পাঠদানের পরিবেশ
স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে মাদ্রাসাটিতে কার্যত কোনো শিক্ষার্থী নেই। শ্রেণিকক্ষগুলো দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত ও জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। এমনকি ছাদের অবস্থা এতটাই খারাপ যে, তা কোনো সময় ধসে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ভুয়া উপস্থাপনা ও অনিয়মের অভিযোগ
সুপার সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি শিক্ষার্থীদের ভুয়া উপস্থিতি দেখিয়ে সরকারি বরাদ্দকৃত বেতন-ভাতা নিয়মিত উত্তোলন করে আসছেন। এছাড়াও ভুয়া ভোটার দিয়ে ম্যানেজিং কমিটি গঠন, কাগজপত্রে জালিয়াতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে।

মাদ্রাসার কয়েকজন সাবেক শিক্ষক ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এসব অনিয়ম সম্পর্কে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও প্রশাসন থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

অভিভাবকদের ক্ষোভ
স্থানীয় অভিভাবক মো. দরমিয়াল ও আমিরু ইসলাম বলেন, “মাদ্রাসাটিতে অনেক ভয়াবহ অবস্থা কোনো ছাত্র নেই। অথচ সুপার প্রতিনিয়ত কাগজে ছাত্র দেখিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা নিচ্ছেন। আমরা চাই তদন্ত হোক এবং প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক।”

সুপারের বক্তব্য
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সুপার সিরাজুল ইসলাম বলেন, “সব অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মাদ্রাসাটি সচল রয়েছে, কিছু সমস্যা আছে, তবে আমরা তা সমাধানের চেষ্টা করছি।”

প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
রাণীশংকৈল উপজেলার সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বেলাল উদ্দিন সরকার বলেন, “ আজ বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটায় তদন্ত অভিযানে আমি দেখি অনেক বিষয়ে গরমিল রয়েছে কি অবস্থা ভালো না। বিষয়টি তদন্তাধীন এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

স্থানীয়দের দাবি
সচেতন এলাকাবাসীর মতে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামে এই ধরনের দুর্নীতি দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করছে। তারা দ্রুত তদন্তপূর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

শেষ কথা:
একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঘিরে এমন অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ভূমিকা ও দায়িত্ব নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। প্রয়োজন দ্রুত ও নিরপেক্ষ তদন্ত।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471