ঢাকা ০১:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সাদুল্লাপুরে ঘোড়ার গাড়িতে বর, উৎসবে মাতোয়ারা পুরো গ্রাম

 

একসময় যে দৃশ্য ছিল গ্রামের রাস্তায় পরিচিত, আজ তা রীতিমতো বিস্ময়। অথচ সেই বিস্ময়ই ফিরে এলো গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে, এক বিয়ের দিনে। চারপাশে কৌতূহলী মানুষের ভিড়, ক্যামেরার ক্লিক, শিশুদের উচ্ছ্বাস আর প্রৌঢ়দের চোখে আনন্দাশ্রু—সব মিলিয়ে যেন ফিরে এলো হারানো এক ঐতিহ্য।

বরের নাম আকন্দ মিয়া, বয়স ২৩। তিনি কনের বাড়িতে গেছেন ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে—জাঁকজমক নয়, বরং বেছে নিয়েছেন আবহমান গ্রামীণ ঐতিহ্যকে।
শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেল। রঙিন কাপড় আর বাহারি ফুলে সাজানো একটি ঘোড়ার গাড়ি এগিয়ে চলেছে সাদুল্লাপুরের একটি গ্রামের পথে। গাড়ির ভেতর বর আকন্দ মিয়া, তার পাশে ঘনিষ্ঠ স্বজনেরা। বিয়ের গন্তব্য রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রসুলপুর গ্রামে কনের বাড়ি।

ঘোড়ার গাড়িটি যখন রাস্তা ধরে এগোয়, তখন পথের দুই পাশে দাঁড়িয়ে শত শত মানুষ উপভোগ করে বিরল এ দৃশ্য। অনেকেই বলেন, ‘এ দৃশ্য শেষ দেখেছিলাম শৈশবে। আজ যেন সেই দিন ফিরে এলো।’

বর আকন্দ মিয়া গাইবান্ধার ধাপেরহাট ইউনিয়নের পালানপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। কনে আফরুজা খাতুন (১৯) রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের আবেদ আলীর মেয়ে।

বর আনন্দ মিয়া বলেন, ‘আজকাল সবাই আধুনিক গাড়িতে বিয়ে করে। কিন্তু আমার স্বপ্ন ছিল ঘোড়ার গাড়িতে কনে বাড়ি যাওয়া। এই ঐতিহ্যকে ধারণ করতে পেরে আমি গর্বিত।’বিয়ের এই আয়োজন ঘিরে কেবল কনে পক্ষই নয়, বরপক্ষ ও স্থানীয়রাও আনন্দে মেতে ওঠেন। পথঘাট ছিল মানুষে মানুষে ভরা, কেউ মোবাইলে ছবি তুলছে, কেউ লাইভ করছে, কেউবা কেবল নীরবে দাঁড়িয়ে অতীতকে অনুভব করছে।

সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাট আর.ভি. কোল্ড স্টোরের ম্যানেজার হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটা শুধু একটি বিয়ে নয়, এটা একটি বার্তা—আমরা এখনও আমাদের শিকড়কে ভুলে যাইনি।’
স্থানীয় অনেক প্রবীণ বলছেন, ‘ঘোড়ার গাড়ির চাকা যেমন ঘুরছিল, আমাদের মনেও তেমনি ঘুরছিল পুরোনো দিনের স্মৃতি।’ এ বিয়ের আয়োজন সবাইকে মনে করিয়ে দিল—ঐতিহ্য মানে শুধু অতীত নয়, সেটি ভবিষ্যতের জন্যও এক অমূল্য সম্পদ।

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

মোল্লাহাটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মোল্লাহাট সদর ইউনিট কমিটি শাখা দ্বি বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সাদুল্লাপুরে ঘোড়ার গাড়িতে বর, উৎসবে মাতোয়ারা পুরো গ্রাম

আপডেট সময় ০১:০০:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

 

একসময় যে দৃশ্য ছিল গ্রামের রাস্তায় পরিচিত, আজ তা রীতিমতো বিস্ময়। অথচ সেই বিস্ময়ই ফিরে এলো গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে, এক বিয়ের দিনে। চারপাশে কৌতূহলী মানুষের ভিড়, ক্যামেরার ক্লিক, শিশুদের উচ্ছ্বাস আর প্রৌঢ়দের চোখে আনন্দাশ্রু—সব মিলিয়ে যেন ফিরে এলো হারানো এক ঐতিহ্য।

বরের নাম আকন্দ মিয়া, বয়স ২৩। তিনি কনের বাড়িতে গেছেন ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে—জাঁকজমক নয়, বরং বেছে নিয়েছেন আবহমান গ্রামীণ ঐতিহ্যকে।
শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেল। রঙিন কাপড় আর বাহারি ফুলে সাজানো একটি ঘোড়ার গাড়ি এগিয়ে চলেছে সাদুল্লাপুরের একটি গ্রামের পথে। গাড়ির ভেতর বর আকন্দ মিয়া, তার পাশে ঘনিষ্ঠ স্বজনেরা। বিয়ের গন্তব্য রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রসুলপুর গ্রামে কনের বাড়ি।

ঘোড়ার গাড়িটি যখন রাস্তা ধরে এগোয়, তখন পথের দুই পাশে দাঁড়িয়ে শত শত মানুষ উপভোগ করে বিরল এ দৃশ্য। অনেকেই বলেন, ‘এ দৃশ্য শেষ দেখেছিলাম শৈশবে। আজ যেন সেই দিন ফিরে এলো।’

বর আকন্দ মিয়া গাইবান্ধার ধাপেরহাট ইউনিয়নের পালানপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। কনে আফরুজা খাতুন (১৯) রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার কাবিলপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের আবেদ আলীর মেয়ে।

বর আনন্দ মিয়া বলেন, ‘আজকাল সবাই আধুনিক গাড়িতে বিয়ে করে। কিন্তু আমার স্বপ্ন ছিল ঘোড়ার গাড়িতে কনে বাড়ি যাওয়া। এই ঐতিহ্যকে ধারণ করতে পেরে আমি গর্বিত।’বিয়ের এই আয়োজন ঘিরে কেবল কনে পক্ষই নয়, বরপক্ষ ও স্থানীয়রাও আনন্দে মেতে ওঠেন। পথঘাট ছিল মানুষে মানুষে ভরা, কেউ মোবাইলে ছবি তুলছে, কেউ লাইভ করছে, কেউবা কেবল নীরবে দাঁড়িয়ে অতীতকে অনুভব করছে।

সাদুল্লাপুরের ধাপেরহাট আর.ভি. কোল্ড স্টোরের ম্যানেজার হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটা শুধু একটি বিয়ে নয়, এটা একটি বার্তা—আমরা এখনও আমাদের শিকড়কে ভুলে যাইনি।’
স্থানীয় অনেক প্রবীণ বলছেন, ‘ঘোড়ার গাড়ির চাকা যেমন ঘুরছিল, আমাদের মনেও তেমনি ঘুরছিল পুরোনো দিনের স্মৃতি।’ এ বিয়ের আয়োজন সবাইকে মনে করিয়ে দিল—ঐতিহ্য মানে শুধু অতীত নয়, সেটি ভবিষ্যতের জন্যও এক অমূল্য সম্পদ।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471