সম্পাদকীয়:
সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষ-হোক শ্রমজীবী কিংবা শিক্ষিত পেশাজীবী-একটি দেশকে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত অবদান রেখে চলেছে। কেউ রোদে পুড়ে ঘাম ঝরায়, আবার কেউবা অফিস কক্ষে পরিকল্পনা সাজায়। কারও শ্রম দৃশ্যমান, কারওটা নেপথ্যে। কিন্তু সবার চেষ্টাই সম্মানযোগ্য।
বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের গণ্ডি পেরিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রযুক্তি, ব্যবসা, শিক্ষার পাশাপাশি সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে-আমাদের মানবসম্পদ। কিন্তু আমরা কি সবার শ্রমকে সমান চোখে দেখছি?
এখনো সমাজে পেশাভিত্তিক শ্রেণিবিভাগের মানসিকতা বিদ্যমান। আমরা শিক্ষিত হয়েও অনেক সময় একজন রাজমিস্ত্রি, গৃহকর্মী বা রিকশাচালকের প্রতি সম্মান দেখাতে কুণ্ঠাবোধ করি। অথচ এই পেশাগুলোই আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাত্রাকে সহজ করে তোলে।
সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হলে, আমাদের ভাবনায় এবং ভাষায় পরিবর্তন আনতে হবে। একটি গার্মেন্টস কর্মীর ঘামে যেমন অর্থনীতি সচল হয়, তেমনি একজন ডেলিভারি কর্মীর সততায় আমরা অনলাইনের সুবিধা পাই। আমরা যদি সবাই সবার শ্রমকে শ্রদ্ধা করি, তাহলেই গড়ে উঠবে একটি মানবিক ও সংহত সমাজ।
এই মুহূর্তে যা প্রয়োজন:
❇ পেশাগত বৈচিত্র্যকে সম্মানের দৃষ্টিতে দেখা
❇ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে “সম্মান ও মূল্যবোধ” বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি
❇ গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে সচেতনতামূলক প্রচার
❇ শিশুদের ছোটবেলা থেকেই পেশাভিত্তিক সম্মানবোধ গড়ে তোলা
শ্রদ্ধা তখনই পূর্ণতা পায়, যখন তা সীমাহীন হয়। সম্মান তখনই মূল্যবান, যখন তা নিরপেক্ষ হয়। আসুন, পেশা নয়-মানুষকে আগে দেখি, সম্মান করি।