ঢাকা ০৯:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোল্লাহাটে নকল কীটনাশকের ফসলের ক্ষতির অভিযোগ এক্সপার্ট এগ্রিকেয়ার ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের বিরুদ্ধে।

  • রায়হান শেখ
  • আপডেট সময় ০৪:৫৫:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

মোল্লাহাট, বাগেরহাট প্রতিনিধি:
এক্সপার্ট এগ্রিকেয়ার ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট লিমিটেড এর বিরুদ্ধে নকল কীটনাশক বাজারজাতকরণের মাধ্যমে কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ঘটনায় কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রতিকার দাবিতে বাগেরহাট জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার গিরিশনগর গ্রামের কৃষক চান মিয়া মোল্লার লিখিত ও মৌখিক অভিযোগে জানা যায়, চিতলমারী উপজেলার দলুয়া গুনি গ্রামের স্থানীয় বাজারে কৃষি বীজ ভান্ডার নামে ফারুক শেখ এর একটি সারের দোকান রয়েছে। ওই দোকান থেকে কিছুদিন পূর্বে দুটি বালাইনাশক ক্রয় করেন তিনি। যা ব্যবহার করে তার পান বরজ ও বিভিন্ন প্রকার সবজি ক্ষেতের সকল ফসল মারা যায়। এতে তার প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এরপর ওই কীটনাশক নিয়ে মোল্লা হাট উপজেলা কৃষি অফিসে যান। সেখানকার পরীক্ষায় ওই কীটনাশক দুটি নকল প্রমাণিত হয়।যাহার একটির নাম এটোজিম মূল উপাদান কার্বেন্ডাজিম, রেজিস্ট্রেশন নং আইএমপি ৫৬৯৫ এবং অন্যটি সিওজেব মূল উপাদান মেনকোজেব ৮০ ℅,এপি ৯০৭০, উভয়ের কোম্পানির নাম এক্সপার্ট এগ্রিকেয়ার ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট লিমিটেড। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যাচাই করে দেখা যায় এই পণ্য দুটির রেজিস্ট্রেশন নকল এবং ওই কোম্পানির অনেক পণ্যই আছে যাহা রেজিস্ট্রেশন নাম্বার নকলটি ব্যবহার করেছে। বাস্তবে এটি সম্প্রসারণের অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট পরীক্ষা করে দেখা যায় বেশিরভাগ পন্যই রেজিস্ট্রেশন নকল। কৃষক চানমিয়া মোল্লা আরো বলেন, ওই কোম্পানির আমি আরো অনেক পণ্য ব্যবহার করেছি ও যাচাই করে দেখেছি সেগুলো ভুয়া এবং মোড়কে অসত্য তথ্য প্রদান করা হয়েছে। বাগেরহাট জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর অফিসে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান উক্ত চানমিয়া মোল্লার অভিযোগের ভিত্তিতে চিতলমারী থানার দোলোগুনী বাজারে ফারুক শেখের কৃষি বিজ ভান্ডার নামক দোকানে অভিযান চালিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় এবং ফারুক হোসেন কে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং ওই পন্যসমূহ নষ্ট করা হয়েছে। ফারুক শেখের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই কোম্পানির আমি পরিবেশক। আমাকে কোম্পানি পন্য সমূহ সরবরাহ করে। এই কোম্পানির ঠিকানা দাশুড়িয়া, ঈশ্বরদী, পাবনা। এই কোম্পানি আমাকে কি পণ্য দিলেন আমার কাছে পরীক্ষা করার কোন ব্যবস্থা নেই। পণ্যটি আসল, নাকি ভেজাল। আমি শুধুমাত্র বিক্রি করতে পারি। আমি পড়ালেখা অতি অল্প জানি। আমি এসব কিছু জানি না। তবে কৃষি অফিস বেশিরভাগ পণ্য ওই কোম্পানির বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন আমি এখন আর বিক্রি করি না। আমার প্রচুর টাকা লস হয়েছে আমার অনেক পণ্য কৃষি অফিস নষ্ট করেছে। বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার মোল্লাহাট বাজারে মধুমতি বীজ ঘর নামক দোকান থেকে এক্সপার্ট এগ্রিকাল ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট লিমিটেড এর প্রচুর পরিমাণ পণ্য বিনষ্ট করেছে মোল্লাহাট কৃষি অফিস। এই পণ্যর রেজিস্ট্রেশন এর সাথে পণ্যের মোড়কে বর্ণিত বর্ণনা মেলে না। কৃষি অফিস ওই কোম্পানির দস্তা সার, বোরণ পরীক্ষার জন্য খুলনা পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু পরীক্ষায় ভেজাল প্রমাণিত হয় এবং বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আর এক ব্যবসায়ী নাসির শেখ এর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি কিছুদিন এই কোম্পানি সাথে ব্যবসা করেছেন। ও-ই কোম্পানির পন্যের মান অতি নিম্নমানের এবং কৃষকগণ ব্যবহার করে কোন প্রকার উপকৃত হন। মোল্লাহাট কৃষি অফিস নিষেধ করায় ঐ কোম্পানির পন্য বিক্রি সম্ভব হয় না। তাই কোম্পানির সাথে ব্যবসা বন্ধ করেছি।গত ১৫ ই মার্চ পাবনা বিসিক থেকে ওই কোম্পানির ভেজাল পণ্য তৈরি করার সময় পাবনা জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর ভেজাল পণ্য জব্দ করে ও নগদ এক লক্ষ টাকা জরিমানা করে। বিভিন্ন জানা যায়, ওই এক্সপার্ট এগ্রিকেয়ার ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট লিমিটেড কোম্পানির মালিক সুজন মাহমুদ হেলাল। তার মামা গত আওয়ামী লীগ আমলে ঈশ্বরদী থেকে আওয়ামীলীগ মনোনীত এমপি। কিছুদিন পর পর এ ধরনের ভেজাল পণ্য ধরা পড়ে এবং ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে ছাড়িয়ে আসেন এবং আবারো ভেজাল পণ্য তৈরি করেন। এভাবে দিনে- রাতে বড়লোক হয়ে যাচ্ছেন। এভাবে অবৈধ অর্থ উপার্জন করে সম্পদের পাহাড় গড়ছেন ।

এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ কৃষির সাথে কোন না কোন ভাবে জড়িত। তাদের কষ্টের টাকা যেন কোন অসাধু কোম্পানির বা ব্যক্তির পকেটে না চলে যায় এবং ফসলের বড় ক্ষতি হাত থেকে যাহাতে তারা রক্ষা পায় এজন্য সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এ দাবি সাধারণ কৃষক এবং ভুক্তভোগী সকল কীটনাশক ব্যবসায়ীর।

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

পাবনায় নৈশ্য প্রহরীর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সাথে যৌন হয়রানির অভিযোগ

মোল্লাহাটে নকল কীটনাশকের ফসলের ক্ষতির অভিযোগ এক্সপার্ট এগ্রিকেয়ার ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট লিমিটেডের বিরুদ্ধে।

আপডেট সময় ০৪:৫৫:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫

মোল্লাহাট, বাগেরহাট প্রতিনিধি:
এক্সপার্ট এগ্রিকেয়ার ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট লিমিটেড এর বিরুদ্ধে নকল কীটনাশক বাজারজাতকরণের মাধ্যমে কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ঘটনায় কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনানুগ প্রতিকার দাবিতে বাগেরহাট জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার গিরিশনগর গ্রামের কৃষক চান মিয়া মোল্লার লিখিত ও মৌখিক অভিযোগে জানা যায়, চিতলমারী উপজেলার দলুয়া গুনি গ্রামের স্থানীয় বাজারে কৃষি বীজ ভান্ডার নামে ফারুক শেখ এর একটি সারের দোকান রয়েছে। ওই দোকান থেকে কিছুদিন পূর্বে দুটি বালাইনাশক ক্রয় করেন তিনি। যা ব্যবহার করে তার পান বরজ ও বিভিন্ন প্রকার সবজি ক্ষেতের সকল ফসল মারা যায়। এতে তার প্রায় অর্ধ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। এরপর ওই কীটনাশক নিয়ে মোল্লা হাট উপজেলা কৃষি অফিসে যান। সেখানকার পরীক্ষায় ওই কীটনাশক দুটি নকল প্রমাণিত হয়।যাহার একটির নাম এটোজিম মূল উপাদান কার্বেন্ডাজিম, রেজিস্ট্রেশন নং আইএমপি ৫৬৯৫ এবং অন্যটি সিওজেব মূল উপাদান মেনকোজেব ৮০ ℅,এপি ৯০৭০, উভয়ের কোম্পানির নাম এক্সপার্ট এগ্রিকেয়ার ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট লিমিটেড। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে যাচাই করে দেখা যায় এই পণ্য দুটির রেজিস্ট্রেশন নকল এবং ওই কোম্পানির অনেক পণ্যই আছে যাহা রেজিস্ট্রেশন নাম্বার নকলটি ব্যবহার করেছে। বাস্তবে এটি সম্প্রসারণের অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট পরীক্ষা করে দেখা যায় বেশিরভাগ পন্যই রেজিস্ট্রেশন নকল। কৃষক চানমিয়া মোল্লা আরো বলেন, ওই কোম্পানির আমি আরো অনেক পণ্য ব্যবহার করেছি ও যাচাই করে দেখেছি সেগুলো ভুয়া এবং মোড়কে অসত্য তথ্য প্রদান করা হয়েছে। বাগেরহাট জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর অফিসে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান উক্ত চানমিয়া মোল্লার অভিযোগের ভিত্তিতে চিতলমারী থানার দোলোগুনী বাজারে ফারুক শেখের কৃষি বিজ ভান্ডার নামক দোকানে অভিযান চালিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায় এবং ফারুক হোসেন কে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং ওই পন্যসমূহ নষ্ট করা হয়েছে। ফারুক শেখের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই কোম্পানির আমি পরিবেশক। আমাকে কোম্পানি পন্য সমূহ সরবরাহ করে। এই কোম্পানির ঠিকানা দাশুড়িয়া, ঈশ্বরদী, পাবনা। এই কোম্পানি আমাকে কি পণ্য দিলেন আমার কাছে পরীক্ষা করার কোন ব্যবস্থা নেই। পণ্যটি আসল, নাকি ভেজাল। আমি শুধুমাত্র বিক্রি করতে পারি। আমি পড়ালেখা অতি অল্প জানি। আমি এসব কিছু জানি না। তবে কৃষি অফিস বেশিরভাগ পণ্য ওই কোম্পানির বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন আমি এখন আর বিক্রি করি না। আমার প্রচুর টাকা লস হয়েছে আমার অনেক পণ্য কৃষি অফিস নষ্ট করেছে। বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার মোল্লাহাট বাজারে মধুমতি বীজ ঘর নামক দোকান থেকে এক্সপার্ট এগ্রিকাল ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট লিমিটেড এর প্রচুর পরিমাণ পণ্য বিনষ্ট করেছে মোল্লাহাট কৃষি অফিস। এই পণ্যর রেজিস্ট্রেশন এর সাথে পণ্যের মোড়কে বর্ণিত বর্ণনা মেলে না। কৃষি অফিস ওই কোম্পানির দস্তা সার, বোরণ পরীক্ষার জন্য খুলনা পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু পরীক্ষায় ভেজাল প্রমাণিত হয় এবং বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আর এক ব্যবসায়ী নাসির শেখ এর সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনি কিছুদিন এই কোম্পানি সাথে ব্যবসা করেছেন। ও-ই কোম্পানির পন্যের মান অতি নিম্নমানের এবং কৃষকগণ ব্যবহার করে কোন প্রকার উপকৃত হন। মোল্লাহাট কৃষি অফিস নিষেধ করায় ঐ কোম্পানির পন্য বিক্রি সম্ভব হয় না। তাই কোম্পানির সাথে ব্যবসা বন্ধ করেছি।গত ১৫ ই মার্চ পাবনা বিসিক থেকে ওই কোম্পানির ভেজাল পণ্য তৈরি করার সময় পাবনা জেলা ভোক্তা অধিদপ্তর ভেজাল পণ্য জব্দ করে ও নগদ এক লক্ষ টাকা জরিমানা করে। বিভিন্ন জানা যায়, ওই এক্সপার্ট এগ্রিকেয়ার ইমপোর্ট এন্ড এক্সপোর্ট লিমিটেড কোম্পানির মালিক সুজন মাহমুদ হেলাল। তার মামা গত আওয়ামী লীগ আমলে ঈশ্বরদী থেকে আওয়ামীলীগ মনোনীত এমপি। কিছুদিন পর পর এ ধরনের ভেজাল পণ্য ধরা পড়ে এবং ক্ষমতার দাপট খাটিয়ে ছাড়িয়ে আসেন এবং আবারো ভেজাল পণ্য তৈরি করেন। এভাবে দিনে- রাতে বড়লোক হয়ে যাচ্ছেন। এভাবে অবৈধ অর্থ উপার্জন করে সম্পদের পাহাড় গড়ছেন ।

এই অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষ কৃষির সাথে কোন না কোন ভাবে জড়িত। তাদের কষ্টের টাকা যেন কোন অসাধু কোম্পানির বা ব্যক্তির পকেটে না চলে যায় এবং ফসলের বড় ক্ষতি হাত থেকে যাহাতে তারা রক্ষা পায় এজন্য সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এ দাবি সাধারণ কৃষক এবং ভুক্তভোগী সকল কীটনাশক ব্যবসায়ীর।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471