ঢাকা ০৫:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুন্দরবনের উপকূলে কলা চাষে ভাগ্য বদল, চাষি পারভেজ খানের সাফল্য নজর কাড়ছে ।

আকরাম হোসেন
বাগেরহাটে জেলা প্রতিনিধি
——————
বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের উপকূলে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে নতুন প্রজাতির জি-৯ জিংক কলা চাষ করে ভাগ্য বদলে ফেলেছেন কৃষক পারভেজ খান। অধিক ফলন ও বাজারে ভালো দাম পেয়ে খুশি তিনি। তার সাফল্যের খবর ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে আগ্রহী চাষিরা ভিড় করছেন তার ক্ষেত দেখতে।

মোরেলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়নের আলতিবুরুজবাড়িয়া গ্রামের কৃষক পারভেজ খান ১৫ বছর ধরে কৃষি পেশায় যুক্ত। এ বছর তিনি ১০ কাঠা জমিতে রংপুর থেকে ৬০ টাকা দরে কেনা জি-৯ কলার ২০০টিরও বেশি চারা রোপণ করেন। মাত্র ৭ মাসেই ফলন আসে, এবং ৯ মাসে তিনি বাজারে কলা বিক্রি শুরু করেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিটি গাছে একটি করে বড় ছড়া ঝুলছে, যা দেশি কলার চেয়ে দীর্ঘ ও ভারী। প্রতিটি ছড়ায় ৩০০ থেকে ৪০০টি কলা হয়। স্বাদেও সুস্বাদু এই জি-৯ কলার বাজারে ব্যাপক চাহিদা এবং দামও দ্বিগুণ।

চাষি পারভেজ খান জানান, আগের বছর দেশি কলা থেকে যেখানে ৫০ হাজার টাকার বিক্রি হতো, এবার সেই জমি থেকে আয় হয়েছে ১ লাখ টাকা। খরচ হয়েছে মাত্র ১০ হাজার টাকা। পাশাপাশি কলার চারা বিক্রি করেও আয় হচ্ছে। প্রতিটি চারা তিনি বিক্রি করছেন ১০০ টাকা দরে।

কলা খেতের শ্রমিক দেলোয়ার শিকদার বলেন, “এর আগে এত বড় কলার ছড়া দেখিনি। প্রতিটি গাছে ঝুলছে কলা, দৃশ্যটা দারুণ। অন্য চাষিরাও এসে দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন।”

পারভেজ খান আরও জানান, তিনি এখন কলা বিক্রির টাকা দিয়ে ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ এবং সংসার চালিয়ে কিছু সঞ্চয়ও করতে পারছেন। তিনি সরকারের কাছ থেকে কৃষি প্রণোদনার দাবিও জানিয়েছেন, যাতে আরও বড় পরিসরে এই চাষ করতে পারেন।

মোরেলগঞ্জ বলইবুনিয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, “পারভেজ খানের সাফল্য দেখে আশপাশের অনেক চাষি অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। আগামী বছর এ চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করছি।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম জানান, “এ উপজেলায় এবারই প্রথম জি-৯ কলা চাষ হয়েছে। আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া গেলে এ কলা চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। কলাটি অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পটাশিয়ামসমৃদ্ধ, যা হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সহায়ক।

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

আজ চাঁদপুরের অর্ধশতাধিক গ্রামে উদযাপিত হচ্ছে ঈদুল আজহা

সুন্দরবনের উপকূলে কলা চাষে ভাগ্য বদল, চাষি পারভেজ খানের সাফল্য নজর কাড়ছে ।

আপডেট সময় ০৯:২৮:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

আকরাম হোসেন
বাগেরহাটে জেলা প্রতিনিধি
——————
বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনের উপকূলে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে নতুন প্রজাতির জি-৯ জিংক কলা চাষ করে ভাগ্য বদলে ফেলেছেন কৃষক পারভেজ খান। অধিক ফলন ও বাজারে ভালো দাম পেয়ে খুশি তিনি। তার সাফল্যের খবর ছড়িয়ে পড়ায় প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে আগ্রহী চাষিরা ভিড় করছেন তার ক্ষেত দেখতে।

মোরেলগঞ্জ উপজেলার দৈবজ্ঞহাটি ইউনিয়নের আলতিবুরুজবাড়িয়া গ্রামের কৃষক পারভেজ খান ১৫ বছর ধরে কৃষি পেশায় যুক্ত। এ বছর তিনি ১০ কাঠা জমিতে রংপুর থেকে ৬০ টাকা দরে কেনা জি-৯ কলার ২০০টিরও বেশি চারা রোপণ করেন। মাত্র ৭ মাসেই ফলন আসে, এবং ৯ মাসে তিনি বাজারে কলা বিক্রি শুরু করেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রতিটি গাছে একটি করে বড় ছড়া ঝুলছে, যা দেশি কলার চেয়ে দীর্ঘ ও ভারী। প্রতিটি ছড়ায় ৩০০ থেকে ৪০০টি কলা হয়। স্বাদেও সুস্বাদু এই জি-৯ কলার বাজারে ব্যাপক চাহিদা এবং দামও দ্বিগুণ।

চাষি পারভেজ খান জানান, আগের বছর দেশি কলা থেকে যেখানে ৫০ হাজার টাকার বিক্রি হতো, এবার সেই জমি থেকে আয় হয়েছে ১ লাখ টাকা। খরচ হয়েছে মাত্র ১০ হাজার টাকা। পাশাপাশি কলার চারা বিক্রি করেও আয় হচ্ছে। প্রতিটি চারা তিনি বিক্রি করছেন ১০০ টাকা দরে।

কলা খেতের শ্রমিক দেলোয়ার শিকদার বলেন, “এর আগে এত বড় কলার ছড়া দেখিনি। প্রতিটি গাছে ঝুলছে কলা, দৃশ্যটা দারুণ। অন্য চাষিরাও এসে দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন।”

পারভেজ খান আরও জানান, তিনি এখন কলা বিক্রির টাকা দিয়ে ছেলে-মেয়ের লেখাপড়ার খরচ এবং সংসার চালিয়ে কিছু সঞ্চয়ও করতে পারছেন। তিনি সরকারের কাছ থেকে কৃষি প্রণোদনার দাবিও জানিয়েছেন, যাতে আরও বড় পরিসরে এই চাষ করতে পারেন।

মোরেলগঞ্জ বলইবুনিয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, “পারভেজ খানের সাফল্য দেখে আশপাশের অনেক চাষি অনুপ্রাণিত হচ্ছেন। আগামী বছর এ চাষ আরও বাড়বে বলে আশা করছি।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম জানান, “এ উপজেলায় এবারই প্রথম জি-৯ কলা চাষ হয়েছে। আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া গেলে এ কলা চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। কলাটি অত্যন্ত সুস্বাদু এবং পটাশিয়ামসমৃদ্ধ, যা হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখতে সহায়ক।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471