জাতীয় নারী ফুটবল দলের গোলরক্ষক ফেরদৌসি আক্তার সোনালীকে ঘিরে এবার পঞ্চগড়ে বইছে আনন্দের জোয়ার।
২৫ আগস্ট ২০২৫, সোমবার বিকেল চারটায় হাড়িভাসা ইউনিয়নের বন গ্রামে যান পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক মোঃ সাবেত আলী। সোনালীর জরাজীর্ণ বাড়ি ঘুরে দেখে তিনি ঘোষণা দেন—সোনালীর পরিবারের জন্য একটি দুই কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ঘর এবং যাতায়াতের সুবিধার্থে দুই কিলোমিটার দীর্ঘ পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হবে।
সোনালী পঞ্চগড় সদর উপজেলার ভ্যানচালক মোহাম্মদ ফারুক ইসলাম ও গৃহিণী মেরিনা বেগমের বড় মেয়ে। তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় সোনালী। শৈশব থেকেই খেলাধুলার প্রতি অগাধ ভালোবাসা থাকলেও তাকে মোকাবিলা করতে হয়েছে গ্রামীণ সমাজের বাঁকা দৃষ্টি, কটূ মন্তব্য ও দারিদ্র্যের কঠিন বাস্তবতা। সব প্রতিকূলতা জয় করে আজ তিনি জাতীয় নারী ফুটবল দলের নির্ভরযোগ্য গোলরক্ষক।
বাবা ফারুক ইসলাম বলেন—
“আমি গরীব মানুষ, ভ্যান চালিয়ে সংসার চালাই। কিন্তু আজ আমার মেয়ে জাতীয় দলে খেলছে, দেশের হয়ে বিদেশে যাচ্ছে—এর চেয়ে গর্ব আর কিছু হতে পারে না। জেলা প্রশাসক মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই।”
মা মেরিনা বেগম আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন—
“অভাব ছিল, কষ্ট ছিল। তবুও মেয়ে কখনো হাল ছাড়েনি। আজ জাতীয় দলে খেলছে—আমি বিশ্বাস করি সামনে দেশের জন্য আরও বড় কিছু অর্জন করবে।”
নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে সোনালী বলেন—
“আমি ভীষণ আনন্দিত। আমাদের বাসায় জেলা প্রশাসক স্যার এসেছেন—এটা আমার জন্য অনেক বড় সম্মান। আমার সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা আমার পরিবারের। তারা সবসময় আমাকে সাপোর্ট করেছে। আমি চেষ্টা করব দেশের জন্য আরও বড় সাফল্য এনে দিতে।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব জাকির হোসেন, হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ নূরি আলম, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যমকর্মীরা।
সোনালীর এই সাফল্যে আনন্দিত শুধু তার পরিবার নয়, উল্লসিত পুরো এলাকাবাসী।
অভাব-অনটনের বেড়াজাল ছিন্ন করে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উঠে আসা সোনালী আজ গোটা বাংলাদেশের গর্ব।