উপকূলীয় উপজেলা কয়রা বাংলাদেশের সেই এলাকাগুলোর একটি, যেখানে জলবায়ু সংকট নারীর স্বাস্থ্যকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
একটি জরিপের তথ্যমতে, জরিপকৃত ৭২.৩% নারী এখনো মাসিকের সময় পুরনো কাপড় ব্যবহার করেন, যা ধুতে পুকুর বা নদীর লবনাক্ত পানি ব্যবহৃত হয়, ফলে চর্মরোগ, জননাঙ্গ সংক্রমণ, এমনকি জরায়ু অপসারণের মতো জটিলতার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেশি। একাধিক গবেষণা অনুযায়ী, উপকূলীয় অঞ্চলে ১৪% নারী জননাঙ্গজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন, যা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় প্রায় ৫ গুণ বেশি।
অনেকে প্যাড ব্যবহার করলেও পানির স্বল্পতার কারণে সেটি যথাযথভাবে পরিবর্তন করতে পারেন না। আর কেউ কেউ বাধ্য হয়ে মাসিক বন্ধ রাখতে জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল গ্রহণ করেন, যা দীর্ঘমেয়াদে আরও ঝুঁকিপূর্ণ।
গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়ে গত বৃহস্পতিবার কাপভার্ট ক্যাম্পেইন মাধ্যমে ২য় ধাপের এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন অনু্ষ্ঠিত হয়। ১ম ধাপে ৭ জন নারীকে এ সুবিধা প্রদান করা হলে তারা সফল ভাবে বর্তমানে কাপ ব্যবহার করছে।
গিভ বাংলাদেশ খুলনার আঞ্চলিক প্রধান আল-আমিন ফরহাদ বলেন,
“উপকূলের নারীরা প্রতিনিয়ত যে প্রতিকূলতায় মাসিক সামলান, তা কল্পনারও বাইরে। Cupvert তাঁদের জন্য শুধু একটি স্বাস্থ্যসেবা নয়-এটি মর্যাদার জায়গা ফিরিয়ে দেওয়ার একটি উদ্যোগ।”
এই কোহর্টের অংশগ্রহণকারীদের মাসিক পরিচর্যার অভ্যাস ও প্রয়োজন সম্পর্কে বেইজলাইন ডেটা সংগ্রহ করা হয়েছে, এবং আগামী ১৮ মাসব্যাপী মনিটরিং ও তথ্য সংগ্রহ চলবে। এই ক্যাম্পেইনের মূল ভিত্তি হচ্ছে কমিউনিটি-নির্ভর বিশেষজ্ঞ-সহায়ক মডেল, যেখানে একজন নারী অন্য নারীকেও কাপ ব্যবহারে উৎসাহ দেবেন, একটি আত্মপ্রবাহিত পরিবর্তনের শুরু হবে।
কর্মশালায় ৫৩ জন নারী চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ নেন menstrual cup ব্যবহারের বিষয়ে। প্রত্যেককে বিনামূল্যে একটি করে কাপ সরবরাহ করা হয়েছে, যা দ্বারা তারা স্বাস্থ্যসম্মতভাবে মাসিক ব্যবস্থাপনা করতে পারবেন- মাত্র কয়েক মগ পানি দিয়েই পরিষ্কার করা সম্ভব এমন একটি টেকসই সমাধান।