ঢাকা ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে অতিবৃষ্টিতে পাটক্ষেতে জলাবদ্ধতা, বিপাকে কৃষকরা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:৫০:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫
  • ৩২ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুর জেলাটি পাট ও পেঁয়াজের জন্য বিখ্যাত । এ কারণে পাট-পেঁয়াজের রাজধানীও বলা হয়ে থাকে এই জেলাকে।
পাট বাংলাদেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল। এখনও পাট দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ফরিদপুর জেলার মধ্যে বিশেষ করে, বোয়ালমারী উপজেলা পাট উৎপাদনে দেশের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।
এবারের চলতি মৌসুমে বোয়ালমারী উপজেলাজুড়ে মোট ১৬,১০৫ (ষোল হাজার একশত পাঁচ) হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে।
কিন্তু বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে থেকেই অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে পাটের জমিতে অস্বাভাবিক পানি জমে পাট বড় হতে পারছে না। সেই সঙ্গে পাটের পরিচর্যা না করাতে পারায় ফলন নিয়ে সংকিত ও বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়েছেন পাটচাষীরা।
জমিতে এভাবে পানি জমে থাকায় পাটের গোড়া পচন ধরেছে। পাটের এমন করুণ দশা হলে এর প্রভাব পড়তে পারে জাতীয় পর্যায়ের পাট উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থায়।
সরেজমিনে ঘুরে ঘুরে দেখা ও জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে পাটক্ষেতে পানি জমে আছে।
উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক আঃ মান্নান মোল্যা বলেন, অতিবৃষ্টিতে পানি জমেছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পাট পড়ে ও ভেঙ্গে গেছে, পোকা ধরেছে। এতে অনেক ক্ষতি হয়েছে।
কৃষক মোঃ সানোয়ার হোসেন কাঁন্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, অনেক কস্ট ও আশা করে পাট চাষ করেছিলাম ভালো ফলন পাব। কিন্তু বৃষ্টির পানি জমে গাছগুলোর গোড়া পচে যাচ্ছে, বাতাসে ভেঙ্গে গেছে, কাটাও যাচ্ছেনা, শিঁকড় হয়ে গেছে, এখন কি করবো, আমার অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলভীর রহমান জানান, অতিবৃষ্টির কারণে নিচু জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, যা পাটের স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ব্যাহত করছে। তিনি বলেন, “কৃষকদের নালা কেটে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে, যাতে পরবর্তী মৌসুমে তাদের সহায়তা দেওয়া যায়।”
তিনি আরও বলেন, “ফরিদপুর অঞ্চলের পাট উৎপাদন জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যদি এখানকার উৎপাদন ব্যাহত হয়, তাহলে দেশে মোট পাট উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এতে বাজারে পাটের দামও প্রভাবিত হতে পারে।”
এদিকে সোনালি আঁশের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হলে কৃষকবান্ধব উদ্যোগ ও ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। বোয়ালমারীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পাট উৎপাদক এলাকায় সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান না হলে জাতীয় অর্থনীতিতেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

মোল্লাহাটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মোল্লাহাট সদর ইউনিট কমিটি শাখা দ্বি বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে অতিবৃষ্টিতে পাটক্ষেতে জলাবদ্ধতা, বিপাকে কৃষকরা

আপডেট সময় ১২:৫০:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী ফরিদপুর জেলাটি পাট ও পেঁয়াজের জন্য বিখ্যাত । এ কারণে পাট-পেঁয়াজের রাজধানীও বলা হয়ে থাকে এই জেলাকে।
পাট বাংলাদেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল। এখনও পাট দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ফরিদপুর জেলার মধ্যে বিশেষ করে, বোয়ালমারী উপজেলা পাট উৎপাদনে দেশের শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।
এবারের চলতি মৌসুমে বোয়ালমারী উপজেলাজুড়ে মোট ১৬,১০৫ (ষোল হাজার একশত পাঁচ) হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে।
কিন্তু বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে থেকেই অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে পাটের জমিতে অস্বাভাবিক পানি জমে পাট বড় হতে পারছে না। সেই সঙ্গে পাটের পরিচর্যা না করাতে পারায় ফলন নিয়ে সংকিত ও বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়েছেন পাটচাষীরা।
জমিতে এভাবে পানি জমে থাকায় পাটের গোড়া পচন ধরেছে। পাটের এমন করুণ দশা হলে এর প্রভাব পড়তে পারে জাতীয় পর্যায়ের পাট উৎপাদন ও বাজার ব্যবস্থায়।
সরেজমিনে ঘুরে ঘুরে দেখা ও জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে পাটক্ষেতে পানি জমে আছে।
উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক আঃ মান্নান মোল্যা বলেন, অতিবৃষ্টিতে পানি জমেছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পাট পড়ে ও ভেঙ্গে গেছে, পোকা ধরেছে। এতে অনেক ক্ষতি হয়েছে।
কৃষক মোঃ সানোয়ার হোসেন কাঁন্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, অনেক কস্ট ও আশা করে পাট চাষ করেছিলাম ভালো ফলন পাব। কিন্তু বৃষ্টির পানি জমে গাছগুলোর গোড়া পচে যাচ্ছে, বাতাসে ভেঙ্গে গেছে, কাটাও যাচ্ছেনা, শিঁকড় হয়ে গেছে, এখন কি করবো, আমার অনেক ক্ষতি হয়ে গেল।

এ বিষয়ে বোয়ালমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলভীর রহমান জানান, অতিবৃষ্টির কারণে নিচু জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে, যা পাটের স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ব্যাহত করছে। তিনি বলেন, “কৃষকদের নালা কেটে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে, যাতে পরবর্তী মৌসুমে তাদের সহায়তা দেওয়া যায়।”
তিনি আরও বলেন, “ফরিদপুর অঞ্চলের পাট উৎপাদন জাতীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যদি এখানকার উৎপাদন ব্যাহত হয়, তাহলে দেশে মোট পাট উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এতে বাজারে পাটের দামও প্রভাবিত হতে পারে।”
এদিকে সোনালি আঁশের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে হলে কৃষকবান্ধব উদ্যোগ ও ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি। বোয়ালমারীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পাট উৎপাদক এলাকায় সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান না হলে জাতীয় অর্থনীতিতেই এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471