ঝালকাঠি সদর উপজেলার পূর্ব গুয়াটনে শতাধিক বাবুই পাখির বাসা ও ছানা ধ্বংস করে একটি তালগাছ কেটে ফেলার অভিযোগে দুইটি পৃথক মামলা হয়েছে। একদিকে ফৌজদারি দণ্ডবিধি, অপরদিকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে—উভয় ধারাতেই আইনের দ্বারে পৌঁছেছে ঘটনাটি।
গত শুক্রবার (২৭ জুন) বিকেলে উপজেলার পূর্ব গুয়াটন এলাকায় মোবারক আলী ফকিরের জমির পাশে অবস্থিত একটি পুরনো তালগাছ কেটে ফেলা হয়। স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, গাছটি বহু বছর ধরে শতাধিক বাবুই পাখির প্রজনন ও বাসস্থানের নিরাপদ আশ্রয় ছিল। গাছে অসংখ্য ঝুলন্ত বাসা, ডিম ও ছানা ছিল—যা কেটে ফেলার সময় মাটিতে পড়ে যায় এবং মারা যায়।
এই বর্বর কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মোবারক আলী, মিজানুর রহমান ও ফারুক হোসেনের নামে ঝালকাঠি সদর থানায় দণ্ডবিধির ৩৭৯ ধারায় মামলা হয়েছে। একইসঙ্গে বন বিভাগের পক্ষ থেকে ‘বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২’-এর আওতায় ‘POR নং ০১/ঝাল/২০২৪-২৫’ নামে আরেকটি মামলা রুজু হয়েছে।
জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “গাছ কাটার ফলে যে ধরনের পরিবেশগত ক্ষতি হয়েছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। আমরা কঠোর অবস্থানে আছি।”
সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামান জানান, অভিযুক্ত তিনজনই মামলার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
উল্লেখযোগ্য যে, বাবুই পাখি শুধু একটি পাখি নয়—এটি আমাদের প্রকৃতি ও লোকজ ঐতিহ্যের প্রতীক। এমন এক অপরাধে শুধু পাখির জীবনই নয়, ধ্বংস হয়েছে একটি জীববৈচিত্র্যময় বাস্তুতন্ত্র।
প্রশ্ন রয়ে যায়—বন্যপ্রাণীর প্রতি এমন নির্মমতা কি শুধু আইনি ব্যবস্থায় শেষ হওয়া উচিত, নাকি চাই আরও সচেতনতা ও সামাজিক জবাবদিহিতা?
এলাকাবাসী দোষীদের কঠিন শাস্তি দাবি জানিয়েছে