রংপুর ব্যুরো চিফ:আজ সেই ১৯ জুলাই । ২০২৪ সালের এই দিনেরেংপুর সিটি কর্পেোরেশনের সামনে ছাত্রজনতার মিছিলে পুলিশের রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও গুলিতে ঘটনাস্থলে নগরীর পূর্বশালবন এলাকার সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন, পূর্ব গণেশপুরের স্বর্ণ শ্রমিক মোসলেম উদ্দিন, ফল বিক্রেতা নিউ জুম্মাপাড়ার মেরাজুল ইসলাম ও পূর্ব শালবনের বাসিন্দা ঢাকার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস অ্যান্ড সিরামিকসের অষ্টম সেমিস্টারের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল তাহির সহ এইদিন রাজধানী ঢাকার গ্রীন রোডে বিকেল ৫টার দিকে পুলিশের গুলিতে নির্মমভাবে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়। ফ্রিল্যান্সিং সাংবাদিক প্রিয় রংপুরের গুপ্তপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
উল্লেখ্য ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই বিকেল ৩টায় নগরীর গ্র্যান্ড হোটেল মোড়স্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে জেলা ও মহানগর বিএনপি। এরপর কয়েক হাজার নেতাকর্মী মিছিলে যোগ দেন। তাদের মিছিলের সঙ্গে নগরীর বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার ছাত্র-জনতা অংশ নেন।
বিকেলে মিছিলটি সিটি কর্পোরেশনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলে সেখানে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষ বেঁধে যায়। পুলিশ ও বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেদিন ছিল বেশ ক্ষুধার্ত। তাদের ছোড়া রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেলে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পুরো এলাকা। চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। পুলিশের অস্ত্রের সামনে ইটপাটকেল নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে ছাত্র-জনতা। এরই একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা মারমুখী হয়ে দফায় দফায় গুলি ছোড়ে। এতে ঘটনাস্থলে নগরীর পূর্বশালবন এলাকার সবজি বিক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন, পূর্ব গণেশপুরের স্বর্ণ শ্রমিক মোসলেম উদ্দিন, ফল বিক্রেতা নিউ জুম্মাপাড়ার মেরাজুল ইসলাম ও পূর্ব শালবনের বাসিন্দা ঢাকার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব গ্লাস অ্যান্ড সিরামিকসের অষ্টম সেমিস্টারের ছাত্র আব্দুল্লাহ আল তাহিরের মৃত্যু হয়। এ সময় শতাধিক আহতকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত অনেকে পুলিশি ঝামেলা এড়াতে হাসপাতালে না গিয়ে বাড়ি ফিরে যান। এ সংঘর্ষে নগরীর জুম্মপাড়ার আবেদ আলী চোখ হারান। সেই সাথে অসংখ্য ছাত্র-জনতার শরীরে গুলি লাগে। আগের দিন ১৮ জুলাই বিকেলে নগরীর মডার্ণ মোড়ে ছাত্র-জনতার সাথে পুলিশের তুমুল সংঘর্ষ হয়। এতে অটোরিকশা চালক ঘাঘট পূর্ব পাড়ার মানিক মিয়া শহীদ হন। ওইদিন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ অফিস, জাতীয় শ্রমিক লীগ অফিস, মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিবি কার্যালয়, তাজহাট থানা, নবাবগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা।