ঢাকা ০২:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রামগঞ্জে ডাক্তারের অবহেলা অ্যান্টিভেনম না দেওয়ায় সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন থাকার পরও সাপে কাটা রোগীকে ইনজেকশন না দিয়ে অন্যত্র পাঠানোর ফলে বিষাক্ত সাপের কামড়ে মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী মোঃ আবদুল আলিম (৫) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রামগঞ্জ পৌর এলাকার ৪নং ওয়ার্ড কলচমা চৌকিদার বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে।
শিশুটির মা মহিমা আক্তার জানান, আমার ছোট ছেলে আবদুল আলিম মাদ্রাসা থেকে এসে দুপুর ১২টায় ঘরের দরজায় বসে খেলছিলো। এসময় হটাৎ সে চিৎকার দিলে আমরা দৌড়ে আসি। এসে দেখতে পাই একটি সাপ আমার ছেলেকে কামড় দিয়ে ঘরের সাথের একটি গর্তে ঢুকে পড়ে। আমি ও আমার জ্যা আবদুল আলিমকে নিয়ে রামগঞ্জ সরকারি হসপিটালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসি।
হসপিটালের ইমার্জেন্সিতে দায়িত্বে থাকা ডাক্তার ফারজানা ইতি এসময় জানান, আমাদের হসপিটালে অ্যান্টিভেনম নাই। আপনারা তাকে দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে নিয়ে যান। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে নেয়ার পথে আমার আদরের সন্তান দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে।
শিশু আবদুল আলিমের মামা মোঃ রাছেল শেখ জানান, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হসপিটালে সাপে কাটা রোগীর জন্য অ্যান্টিভেনম নাই। এটা আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই অ্যান্টিভেনমসহ মূল্যবান মেডিসিনগুলো হসপিটাল কর্তৃপক্ষ অন্যত্রে বিক্রি করে দেয়ার কারনে আজ আমার ভাগিনার মৃত্যু হয়েছে। আমি এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের শাস্তি দাবী করছি।
এ বিষয়ে ডাক্তার ফারজানা ইতি জানান, ১২টার পর শিশুটিকে হসপিটালে নিয়ে আসা হলেও শিশুটির মা বলতে পারছেন না তাকে সাপে নাকি ব্যাঙ কামড় দিয়েছে। আমার সন্দেহ হলে তার ব্লাড পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ পাই। এছাড়া শিশুটির স্বজনদের অ্যান্টিভেনমের পাশ্বপ্রতিক্রিয়া শ্বাস প্রশ্বাস কমের উপসর্গ দেখা দিতে পারে জানালে তারা শিশুটিকে অন্যত্রে চিকিৎসা করানোর কথা বললে আমি শিশুর স্বজনদের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স যোগাড় করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে রেফার করি। আমাদের কাছে অ্যান্টিভেনম থাকার পরও কেন দিবো না?
তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আনোয়ার হোসেন জানান, এমনতো হওয়ার কথা না। আমাদের হসপিটালে সাপে কামড় দেয়া কমপক্ষে চারজন রোগীকে দেয়ার মতো অ্যান্টিভেনম রয়েছে। আমি খবর নিয়ে জানাচ্ছি। এসময় তিনি আরো জানান, যদি অন্য কোথাও রোগীকে রেফার করতে হয় তাহলে অবশ্যই তাকে অ্যান্টিভেনম দিয়েই রেফার করতে হবে। কিন্তু কি কারনে তিনি (ডাক্তার ফারজানা ইতি) অ্যান্টিভেনম দেননি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

রামগঞ্জে ডাক্তারের অবহেলা অ্যান্টিভেনম না দেওয়ায় সাপে কাটা রোগীর মৃত্যু

আপডেট সময় ১০:৫১:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অগাস্ট ২০২৫

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম ইনজেকশন থাকার পরও সাপে কাটা রোগীকে ইনজেকশন না দিয়ে অন্যত্র পাঠানোর ফলে বিষাক্ত সাপের কামড়ে মাদ্রাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী মোঃ আবদুল আলিম (৫) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রামগঞ্জ পৌর এলাকার ৪নং ওয়ার্ড কলচমা চৌকিদার বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটে।
শিশুটির মা মহিমা আক্তার জানান, আমার ছোট ছেলে আবদুল আলিম মাদ্রাসা থেকে এসে দুপুর ১২টায় ঘরের দরজায় বসে খেলছিলো। এসময় হটাৎ সে চিৎকার দিলে আমরা দৌড়ে আসি। এসে দেখতে পাই একটি সাপ আমার ছেলেকে কামড় দিয়ে ঘরের সাথের একটি গর্তে ঢুকে পড়ে। আমি ও আমার জ্যা আবদুল আলিমকে নিয়ে রামগঞ্জ সরকারি হসপিটালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসি।
হসপিটালের ইমার্জেন্সিতে দায়িত্বে থাকা ডাক্তার ফারজানা ইতি এসময় জানান, আমাদের হসপিটালে অ্যান্টিভেনম নাই। আপনারা তাকে দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে নিয়ে যান। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে নেয়ার পথে আমার আদরের সন্তান দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে।
শিশু আবদুল আলিমের মামা মোঃ রাছেল শেখ জানান, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হসপিটালে সাপে কাটা রোগীর জন্য অ্যান্টিভেনম নাই। এটা আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। আমি দৃঢ়ভাবে বলতে চাই অ্যান্টিভেনমসহ মূল্যবান মেডিসিনগুলো হসপিটাল কর্তৃপক্ষ অন্যত্রে বিক্রি করে দেয়ার কারনে আজ আমার ভাগিনার মৃত্যু হয়েছে। আমি এ ঘটনায় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের শাস্তি দাবী করছি।
এ বিষয়ে ডাক্তার ফারজানা ইতি জানান, ১২টার পর শিশুটিকে হসপিটালে নিয়ে আসা হলেও শিশুটির মা বলতে পারছেন না তাকে সাপে নাকি ব্যাঙ কামড় দিয়েছে। আমার সন্দেহ হলে তার ব্লাড পরীক্ষা করিয়ে নেগেটিভ পাই। এছাড়া শিশুটির স্বজনদের অ্যান্টিভেনমের পাশ্বপ্রতিক্রিয়া শ্বাস প্রশ্বাস কমের উপসর্গ দেখা দিতে পারে জানালে তারা শিশুটিকে অন্যত্রে চিকিৎসা করানোর কথা বললে আমি শিশুর স্বজনদের সরকারি অ্যাম্বুলেন্স যোগাড় করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হসপিটালে রেফার করি। আমাদের কাছে অ্যান্টিভেনম থাকার পরও কেন দিবো না?
তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আনোয়ার হোসেন জানান, এমনতো হওয়ার কথা না। আমাদের হসপিটালে সাপে কামড় দেয়া কমপক্ষে চারজন রোগীকে দেয়ার মতো অ্যান্টিভেনম রয়েছে। আমি খবর নিয়ে জানাচ্ছি। এসময় তিনি আরো জানান, যদি অন্য কোথাও রোগীকে রেফার করতে হয় তাহলে অবশ্যই তাকে অ্যান্টিভেনম দিয়েই রেফার করতে হবে। কিন্তু কি কারনে তিনি (ডাক্তার ফারজানা ইতি) অ্যান্টিভেনম দেননি তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471