ঢাকা ০২:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভিক্ষা করে জীবন চলে তাঁরা বেগম ও জহুরা বেগমের

  • এম,শাহজাহান
  • আপডেট সময় ১০:৫০:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫
  • ১১ বার পড়া হয়েছে

(ঝিনাইগাতী উপজেলা সংবাদদাতাঃ) ভিক্ষা করে জীবন চলে তাঁরা বেগম ও জহুরা বেগমের, একদিন ভিক্ষা না করলে খাওন জোটে না তাদের। শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের গেরামারা গ্রামের ৯৫ বছর বয়সী তারা বেগম ও একই বয়সী জুহুরা বেগম চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, কেউ আমার খোঁজ নেয়না, তাও চাই, মরার আগে দুইবেলা পেটভরে খাইতে। এখন ভিক্ষা করতে গেলে খুব কষ্ট হয়, হাত পা খুব ব্যাথা করে। সরেজমিনে দেখা যায় তারা বেগম ও জুহুরা বেগম বয়স প্রায় ৯৫ বছর। কারও কাছে মা, কারও কাছে দাদি কিন্তু জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তাঁদের নিত্যদিনের সঙ্গী শুধু ক্ষুধা আর কষ্ট। পেটের দায়ে প্রতিদিন বের হন তাঁরা ভিক্ষার খুঁজে। কারো দরজায় দাঁড়িয়ে থাকেন নিঃশব্দে, কারো উঠানে বসে থাকেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কেউ এক মুঠো চাল দেন, কেউ কিছু না দিলে ফিরে যান তাদের কোন অভিযোগ নেই। কারণ তাঁরা জানেন ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে এই বয়সে ভিক্ষা ছাড়া কোন উপায় নেই তাদের। এই দুই বৃদ্ধার জীবন যেন অবহেলা আর কষ্টের প্রতিচ্ছবি। সহায়-সম্পদ বলতে আছে শুধু টিনের একটা ভাঙা ঘড়। জীবন চলে মানুষের দয়ার উপর নির্ভর করে। হাঁটতে পারেনা ভালোভাবে, চোখে ঝাপসা দেখে। কিন্তু তবুও লাঠি ভর করে এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে যান এক মুঠো চাল বা ২টা টাকার আশায়। তারা বেগম জানান, বয়স্ক ভাতা পাই, মাসে ৬০০ টেহা। এই টেহা দিয়া ভাত কিনমু, না ওষুধ কিনমু। আমগর ও ইচ্ছা হয় এক বেলা ভালা তরকারী দিয়ে পেট ভইরা ভাত খাইতে। কিন্তু ভালা খাওন পামু কই। জুহুরা বেগম বলেন, হাসপাতালে গেলে কয়, ওষুধ বাইর থেইকা কিনুন লাগবো। কিন্তু বাইর থেইকা ওষুধ কিনার টেহা পামু কই।
স্থানীয়দের সাথে কথা হলে তারা বলেন, এই দুই বৃদ্ধা বছরের পর বছর ধরে একই কষ্টে দিন পার করছেন। বর্ষা হোক কিংবা রোদ, তাঁদের দেখা যায় রাস্তায় বসে থাকতে, কিংবা কারও দরজায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে। কখনো কেউ চাল দেয়, কখনো খালি হাতে ফিরে আসে। ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, এই দুইজন অনেক বছর ধইরা এমনি কষ্টে আছে। কেউ খোঁজ নেয়না। আমরা যা পারি ততটুকু দেই, কিন্তু সবসময় তো দিতে পারি না। সরকার যদি একটু সাহায্য করত, অন্তত দুই বেলা ভাত আর ওষুধ পাইলে এই মানুষগুলা আর ভিক্ষা করতো না।
এবিষয়ে কাকিলাকুড়া, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হামিদ উল্লাহ তালুকদার বলেন, আমি তাদের সেই ভাবে চিনিনা, এখন তাদের বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি, পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সাহায্য সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে।

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

সাতক্ষীরা তালার সাবেক সাংসদ হাবিবুল ইসলাম হাবিবের সুস্থতা কামনায় দোয়া অনুষ্ঠান।

ভিক্ষা করে জীবন চলে তাঁরা বেগম ও জহুরা বেগমের

আপডেট সময় ১০:৫০:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ জুলাই ২০২৫

(ঝিনাইগাতী উপজেলা সংবাদদাতাঃ) ভিক্ষা করে জীবন চলে তাঁরা বেগম ও জহুরা বেগমের, একদিন ভিক্ষা না করলে খাওন জোটে না তাদের। শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের গেরামারা গ্রামের ৯৫ বছর বয়সী তারা বেগম ও একই বয়সী জুহুরা বেগম চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, কেউ আমার খোঁজ নেয়না, তাও চাই, মরার আগে দুইবেলা পেটভরে খাইতে। এখন ভিক্ষা করতে গেলে খুব কষ্ট হয়, হাত পা খুব ব্যাথা করে। সরেজমিনে দেখা যায় তারা বেগম ও জুহুরা বেগম বয়স প্রায় ৯৫ বছর। কারও কাছে মা, কারও কাছে দাদি কিন্তু জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তাঁদের নিত্যদিনের সঙ্গী শুধু ক্ষুধা আর কষ্ট। পেটের দায়ে প্রতিদিন বের হন তাঁরা ভিক্ষার খুঁজে। কারো দরজায় দাঁড়িয়ে থাকেন নিঃশব্দে, কারো উঠানে বসে থাকেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কেউ এক মুঠো চাল দেন, কেউ কিছু না দিলে ফিরে যান তাদের কোন অভিযোগ নেই। কারণ তাঁরা জানেন ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে এই বয়সে ভিক্ষা ছাড়া কোন উপায় নেই তাদের। এই দুই বৃদ্ধার জীবন যেন অবহেলা আর কষ্টের প্রতিচ্ছবি। সহায়-সম্পদ বলতে আছে শুধু টিনের একটা ভাঙা ঘড়। জীবন চলে মানুষের দয়ার উপর নির্ভর করে। হাঁটতে পারেনা ভালোভাবে, চোখে ঝাপসা দেখে। কিন্তু তবুও লাঠি ভর করে এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে যান এক মুঠো চাল বা ২টা টাকার আশায়। তারা বেগম জানান, বয়স্ক ভাতা পাই, মাসে ৬০০ টেহা। এই টেহা দিয়া ভাত কিনমু, না ওষুধ কিনমু। আমগর ও ইচ্ছা হয় এক বেলা ভালা তরকারী দিয়ে পেট ভইরা ভাত খাইতে। কিন্তু ভালা খাওন পামু কই। জুহুরা বেগম বলেন, হাসপাতালে গেলে কয়, ওষুধ বাইর থেইকা কিনুন লাগবো। কিন্তু বাইর থেইকা ওষুধ কিনার টেহা পামু কই।
স্থানীয়দের সাথে কথা হলে তারা বলেন, এই দুই বৃদ্ধা বছরের পর বছর ধরে একই কষ্টে দিন পার করছেন। বর্ষা হোক কিংবা রোদ, তাঁদের দেখা যায় রাস্তায় বসে থাকতে, কিংবা কারও দরজায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে। কখনো কেউ চাল দেয়, কখনো খালি হাতে ফিরে আসে। ওই গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, এই দুইজন অনেক বছর ধইরা এমনি কষ্টে আছে। কেউ খোঁজ নেয়না। আমরা যা পারি ততটুকু দেই, কিন্তু সবসময় তো দিতে পারি না। সরকার যদি একটু সাহায্য করত, অন্তত দুই বেলা ভাত আর ওষুধ পাইলে এই মানুষগুলা আর ভিক্ষা করতো না।
এবিষয়ে কাকিলাকুড়া, ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হামিদ উল্লাহ তালুকদার বলেন, আমি তাদের সেই ভাবে চিনিনা, এখন তাদের বিষয়ে আমি অবগত হয়েছি, পরবর্তীতে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সাহায্য সহযোগিতা করার চেষ্টা করা হবে।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471