নিজস্ব প্রতিবেদক |
স্টাফ রিপোর্টার গাজীপুর।
বাংলাদেশের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা টঙ্গী-তে শিক্ষার্থীদের হোস্টেল সংস্কারের ১৩ দফা দাবি নিয়ে টানা আন্দোলন চলছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের দাবি-দাওয়া অগ্রাহ্য করে আসছে প্রশাসন। অবশেষে বাধ্য হয়েই তারা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়।
বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে আন্দোলনের সূচনা
গত ৩০ জুলাই রাত ১১টায় আন্দোলনের সূচনা করেন শরীয়তুল্লাহ ও তিতুমীর হলের শিক্ষার্থীরা। তারা হলগুলোর বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আন্দোলনের সূচনা করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে ব্লক টিচাররা প্রশাসনিক ভবনে আশ্রয় নেন। এরপর শিক্ষার্থীরা একত্র হয়ে ফলাফল সংস্কারসহ ১৩ দফা দাবি তুলে ধরেন।
উত্তেজনা, অশালীন স্লোগান ও টাকসুর হস্তক্ষেপ
আন্দোলনের এক পর্যায়ে উত্তেজিত কিছু শিক্ষার্থী শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে অশালীন স্লোগান দিলে তা’মীরুল মিল্লাত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (টাকসু)-এর জেনারেল সেক্রেটারি সাইদুল ইসলাম হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি শান্ত করেন।
পরদিন সকালে অধ্যক্ষের পক্ষ থেকে আলোচনার আশ্বাস দেওয়া হয় এবং আলোচনায় ১২ দফা দাবি মেনে নেওয়া হয় বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
এডমিট কার্ড জব্দ: শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ
তবে, ৩ আগস্ট আলিম পরীক্ষা চলাকালে, শিক্ষক ড. সালমান ফারসি তিন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর এডমিট কার্ড জব্দ করেন।
এ ঘটনাকে অনেকেই আন্দোলনের প্রতিশোধ হিসেবে দেখছেন।
এক আন্দোলনকারী বলেন,
> “আমরা পরীক্ষা দিচ্ছিলাম মানসিক চাপে। এডমিট কার্ড জব্দ করায় আমরা ভেঙে পড়েছি।”
ড. সালমান ফারসি এ বিষয়ে বলেন,
> “তোমরা তোমাদের ক্ষমতা দেখিয়েছো, এবার আমরা আমাদের দেখাচ্ছি।”
হুঁশিয়ারি ও ছাত্র সংসদের প্রতিক্রিয়া
আন্দোলনে আবার সক্রিয় হলে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
টাকসুর জিএস সাইদুল ইসলাম বলেন,
> “শিক্ষকের কাছ থেকে এমন আচরণ কাম্য নয়। অধ্যক্ষ মহোদয়কে জানানো হয়েছে, তিনি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।”
হোস্টেলের খাবার নিয়ে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষোভ
শুধু একাডেমিক নয়, হোস্টেলের খাবার নিয়েও শিক্ষার্থীদের দীর্ঘমেয়াদি অসন্তোষ রয়েছে।
তাদের অভিযোগ, হোস্টেল সুপার নুরুল হক দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই খাবারের মান নিম্নমুখী হয়েছে।
এ নিয়ে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
ড. সালমানের ব্যাখ্যা
ড. সালমান ফারসি বলেন,
> “আন্দোলনের যৌক্তিকতা থাকলেও শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে অশালীন ভাষা ব্যবহার গ্রহণযোগ্য নয়। বিশৃঙ্খলা রোধে সাময়িকভাবে এডমিট কার্ড জব্দ করেছি, পরে তা ফিরিয়ে দেওয়া হবে।”
অধ্যক্ষের বক্তব্য অনুপস্থিত
এ বিষয়ে অধ্যক্ষ ড. হিফজুর রহমান-এর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।