বিলাল উদ্দিন, ক্রাইম রিপোর্টার,
সিলেট প্রতিনিধি ॥
সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলা আজকাল পরিণত হয়েছে অপরাধ ও ক্রাইমের এক স্বর্গরাজ্যে। ভারতের সাথে দীর্ঘ সীমান্ত এলাকা থাকায় এই পথকে ব্যবহার করছে নানা ধরনের অপরাধী চক্র। স্থানীয়ভাবে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা এসব চক্র দেশীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়েই নয়, বরং তাদের কিছু অসাধু সদস্যের সহযোগিতা নিয়েও এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।
সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে আসামিরা
দেশের বিভিন্ন এলাকায় সংঘটিত হত্যা ও খুনের মামলার আসামিরা সহজেই এই সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়ভাবে কিছু দুর্বৃত্ত তাদের নিরাপদে পারাপারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। ফলে হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
মাদক ও চোরাচালানের নিরাপদ রুট
সীমান্ত এলাকা হওয়ায় এখানে সবচেয়ে বেশি সক্রিয় চোরাচালান চক্র। ভারত থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদক, ফেনসিডিল, গাঁজা, ইয়াবা ও বিদেশি মদ অবাধে প্রবেশ করছে। শুধু মাদক নয়, গরু, শাড়ি, কসমেটিকসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় নানা পণ্যও চোরাচালানের মাধ্যমে প্রতিদিন প্রবেশ করছে। এ থেকে সীমান্তবর্তী কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিও মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জন করছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্য এই অপরাধ চক্রের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। তারা অপরাধীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখে। কখনো আবার সরাসরি সহযোগিতা দিয়ে অপরাধকর্ম সহজ করে দেয়।
এই সমস্ত অপরাধ কর্মকাণ্ডের কারণে সীমান্তবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ আতঙ্কে দিনযাপন করছে। রাত হলে সীমান্তবর্তী রাস্তাগুলোয় ছিনতাই, চুরি-ডাকাতির ঘটনাও বাড়ছে। ফলে মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলাকে অপরাধের স্বর্গরাজ্য থেকে মুক্ত করতে হলে সীমান্তে কঠোর নজরদারি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে থাকা অসাধু ব্যক্তিদের শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা জরুরি। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষকে একসাথে কাজ করতে হবে।
সীমান্ত এলাকা গোয়াইনঘাটে অপরাধ ও চোরাচালান দমনে তাৎক্ষণিকভাবে জোরদার পদক্ষেপ না নিলে ভবিষ্যতে এটি দেশের জন্য ভয়ংকর নিরাপত্তা ঝুঁকি হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।