ঢাকা ০৪:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাগেরহাটে তীব্র গরম ও ঘনঘন লোডশেডিং এ জনজীবন অতিষ্ঠ

 

জ্যৈষ্ঠের এই আম পাকানো গরমে, নরম হয়ে যাচ্ছে দামালের দল। বল প্রয়োগ করে গরমের সাথে যুদ্ধ করা সম্ভব নয়, অসম্ভব লোডশেডিং আর তীব্র গরমে বাগেরহাট বাসীর সাধারণ জীবনযাপন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে প্রায়। জনজীবনের বেহাল দশা, রাত দিন 24 ঘন্টা সমানে চলছে গরমের তীব্র দাপট। এরই মধ্যে আবার বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় চলছে ঘন ঘন লোডশেডিং। বিশেষ করে মোড়েলগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে ঘনঘন লোডশেডিং দেখা যায়।
যেমন, পুটিখালী, পঞ্চকরণ, বলইবুনিয়া, রামচন্দ্রপুর, চিংডাখালি, তেলিগাতি এদের ভিতর অন্যতম।

এই ঘন ঘন লোডশেডিং এর কারণে শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম বিপাকে, তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটছে। শুধু বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় নয়, বাগেরহাট সদরসহ আরও ৮ টি উপজেলায় একই অবস্থা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ২৪ ঘন্টার ভিতরে ১২ ঘন্টারও বেশি বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে শিশু বৃদ্ধসহ যারা বাড়িতে অসুস্থ রোগী আছেন, তাদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। বিদ্যুৎ না থাকায় বেশিক্ষণ ঘরে থাকা সম্ভব হয় না ফলে একটু শান্তির পরশ পেতে আশ্রয় নিতে হয় গাছ তলায়। মাদুর বিছিয়ে গাছের সাথে গা হেলিয়ে শুয়ে থাকতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা।

এছাড়া খাবার রান্না সহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গৃহিণীরা। রাত আর দিন নয় ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলছে। বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ্য অনুযায়ী প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ২৬ মেগাওয়াট, আর জোগান দেওয়া হচ্ছে ১৪ মেগাওয়াট, এই ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণ করতে লোডশেডিং এর প্রভাব বেড়েই চলছে।

মোড়েলগঞ্জ উপজেলার পুটিখালি ইউনিয়নের এবি গজালিয়া বাজারের মুদির দোকানদার ব্যবসায়ী, মোহাম্মদ নোমান শেখ বলেন, এই তীব্র গরমে আইসক্রিম ও কোলড্রিংস এর চাহিদা বেশি থাকে কিন্তু এই ঘন ঘন লোডশেডিং এর ফলে আইসক্রিম গলে যাচ্ছে এবং কোল্ড ড্রিঙ্কস গরম হয়ে যাচ্ছে, তাই লাভের তুলনায় লস বেশি হচ্ছে।

এবি গজালিয়া হাজী মহের উদ্দিন স্মৃতি দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মোহাম্মদ নাঈম মাতুব্বর বলেন বিদ্যুতের এই ঘন ঘন লোডশেডিং এর কারণে লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে পারছি না। এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক মাহমুদুল হাসান বলেন, সারাদেশে ব্যাপক হার বিদ্যুৎ অপচয় হচ্ছে। লোডশেডিং কমাতে হলে প্রথমত আমাদের সচেতন হতে হবে। বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করতে পারলে তুলনামূলকভাবে লোডশেডিং কমিয়ে আনা যাবে বলে আশা করা যায়।

বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার সুশান্ত রায় জানান, আমরা বিদ্যুতের যোগান চাহিদা অনুযায়ী কম পাচ্ছি তাই বিদ্যুৎ সেবা দিতে গিয়ে লোডশেডিং হচ্ছে। যেখানে বিদ্যুতের চাহিদা ২৬ মেগাওয়াট সেখানে আমরা যোগান পাচ্ছি ১৩ থেকে ১৪ মেগাওয়াট। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের যোগান থাকলে গ্রাহকদের এই সমস্যার সম্মুখীন হওয়া লাগতো না। প্রচন্ড তাপদাহ হওয়াতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বিদ্যুতের চাহিদা বেশ বেড়ে গেছে। তীব্র গরমে লোডশেডিং কমিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি।
আবহাওয়া কিছুটা শীতল হলে চাহিদা কমবে এবং লোডশেডিং এর মাত্রা ও কমে যাবে বলে জানান তিনি।

সর্বোপরি বিদ্যুৎ আমাদের জাতীয় সম্পদ। আর এই জাতীয় সম্পদ রক্ষার ক্ষেত্রে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে বিদ্যুৎ অপচয়রোধ সচেতন হতে হবে। দশের লাঠি একের বোঝা, এই স্লোগানে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আসুন আমরা সবাই জাতীয় সম্পদ রক্ষার্থে, জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হই। একটি সুন্দর সমাজ, একটি সুন্দর দেশ গড়ায় দৃঢ় পরিকর হই ।

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

মোল্লাহাটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মোল্লাহাট সদর ইউনিট কমিটি শাখা দ্বি বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

বাগেরহাটে তীব্র গরম ও ঘনঘন লোডশেডিং এ জনজীবন অতিষ্ঠ

আপডেট সময় ০৩:১১:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫

 

জ্যৈষ্ঠের এই আম পাকানো গরমে, নরম হয়ে যাচ্ছে দামালের দল। বল প্রয়োগ করে গরমের সাথে যুদ্ধ করা সম্ভব নয়, অসম্ভব লোডশেডিং আর তীব্র গরমে বাগেরহাট বাসীর সাধারণ জীবনযাপন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে প্রায়। জনজীবনের বেহাল দশা, রাত দিন 24 ঘন্টা সমানে চলছে গরমের তীব্র দাপট। এরই মধ্যে আবার বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় চলছে ঘন ঘন লোডশেডিং। বিশেষ করে মোড়েলগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে ঘনঘন লোডশেডিং দেখা যায়।
যেমন, পুটিখালী, পঞ্চকরণ, বলইবুনিয়া, রামচন্দ্রপুর, চিংডাখালি, তেলিগাতি এদের ভিতর অন্যতম।

এই ঘন ঘন লোডশেডিং এর কারণে শিক্ষার্থীরা পড়েছে চরম বিপাকে, তাদের পরীক্ষা প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটছে। শুধু বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জ উপজেলায় নয়, বাগেরহাট সদরসহ আরও ৮ টি উপজেলায় একই অবস্থা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ২৪ ঘন্টার ভিতরে ১২ ঘন্টারও বেশি বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে শিশু বৃদ্ধসহ যারা বাড়িতে অসুস্থ রোগী আছেন, তাদের পড়তে হচ্ছে চরম ভোগান্তিতে। বিদ্যুৎ না থাকায় বেশিক্ষণ ঘরে থাকা সম্ভব হয় না ফলে একটু শান্তির পরশ পেতে আশ্রয় নিতে হয় গাছ তলায়। মাদুর বিছিয়ে গাছের সাথে গা হেলিয়ে শুয়ে থাকতে হয় ঘন্টার পর ঘন্টা।

এছাড়া খাবার রান্না সহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গৃহিণীরা। রাত আর দিন নয় ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলছে। বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তথ্য অনুযায়ী প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা ২৬ মেগাওয়াট, আর জোগান দেওয়া হচ্ছে ১৪ মেগাওয়াট, এই ১২ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি পূরণ করতে লোডশেডিং এর প্রভাব বেড়েই চলছে।

মোড়েলগঞ্জ উপজেলার পুটিখালি ইউনিয়নের এবি গজালিয়া বাজারের মুদির দোকানদার ব্যবসায়ী, মোহাম্মদ নোমান শেখ বলেন, এই তীব্র গরমে আইসক্রিম ও কোলড্রিংস এর চাহিদা বেশি থাকে কিন্তু এই ঘন ঘন লোডশেডিং এর ফলে আইসক্রিম গলে যাচ্ছে এবং কোল্ড ড্রিঙ্কস গরম হয়ে যাচ্ছে, তাই লাভের তুলনায় লস বেশি হচ্ছে।

এবি গজালিয়া হাজী মহের উদ্দিন স্মৃতি দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মোহাম্মদ নাঈম মাতুব্বর বলেন বিদ্যুতের এই ঘন ঘন লোডশেডিং এর কারণে লেখাপড়ায় মনোযোগী হতে পারছি না। এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক মাহমুদুল হাসান বলেন, সারাদেশে ব্যাপক হার বিদ্যুৎ অপচয় হচ্ছে। লোডশেডিং কমাতে হলে প্রথমত আমাদের সচেতন হতে হবে। বিদ্যুৎ অপচয় রোধ করতে পারলে তুলনামূলকভাবে লোডশেডিং কমিয়ে আনা যাবে বলে আশা করা যায়।

বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার সুশান্ত রায় জানান, আমরা বিদ্যুতের যোগান চাহিদা অনুযায়ী কম পাচ্ছি তাই বিদ্যুৎ সেবা দিতে গিয়ে লোডশেডিং হচ্ছে। যেখানে বিদ্যুতের চাহিদা ২৬ মেগাওয়াট সেখানে আমরা যোগান পাচ্ছি ১৩ থেকে ১৪ মেগাওয়াট। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের যোগান থাকলে গ্রাহকদের এই সমস্যার সম্মুখীন হওয়া লাগতো না। প্রচন্ড তাপদাহ হওয়াতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বিদ্যুতের চাহিদা বেশ বেড়ে গেছে। তীব্র গরমে লোডশেডিং কমিয়ে আনতে আমরা কাজ করছি।
আবহাওয়া কিছুটা শীতল হলে চাহিদা কমবে এবং লোডশেডিং এর মাত্রা ও কমে যাবে বলে জানান তিনি।

সর্বোপরি বিদ্যুৎ আমাদের জাতীয় সম্পদ। আর এই জাতীয় সম্পদ রক্ষার ক্ষেত্রে সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে বিদ্যুৎ অপচয়রোধ সচেতন হতে হবে। দশের লাঠি একের বোঝা, এই স্লোগানে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আসুন আমরা সবাই জাতীয় সম্পদ রক্ষার্থে, জাতীয় স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হই। একটি সুন্দর সমাজ, একটি সুন্দর দেশ গড়ায় দৃঢ় পরিকর হই ।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471