ঢাকা ০১:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পবায় সুরক্ষা দেয়াল না থাকায় সড়কের ধস: ইউএনওর হস্তক্ষেপে চালু হলো অস্থায়ী যোগাযোগ

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৩:০২:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
  • ১৮ বার পড়া হয়েছে

 

ঠিকাদারের অবহেলায় রাজশাহীর পবা উপজেলায় নির্মাণকাজ চলার মধ্যেই ভারী বর্ষণে একটি সড়কের একাংশ ধসে পড়েছে। উপজেলার নওহাটা পৌরসভার পাকুড়িয়া এলাকায় দুটি পুকুরের মাঝ দিয়ে যাওয়া সড়কটি ধসে পড়ায় পাকুড়িয়া উত্তর ও দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন হাজারো গ্রামবাসী।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক আরাফাত আমান আজিজ মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তাঁর হস্তক্ষেপে বালু ও মাটি ফেলে অস্থায়ীভাবে সড়কটি চালু করায় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
জানা গেছে, নওহাটা পৌরসভার অধীনে ২০ কোটি টাকার প্রকল্পের আওতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স জুয়েল ইলেক্ট্রোনিক্স এন্ড জেভি ওয়াশিমুল হক’ ১০টি সড়ক নির্মাণ করছে। ধসে পড়া সড়কটি দুয়ারী প্রাইমারি স্কুল থেকে পাকুরিয়া প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ চলমান কার্পেটিং কাজের অংশ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়কটির দুই পাশে পুকুর থাকলেও ঠিকাদার সময়মতো সুরক্ষা দেয়াল (প্রোটেকশন ওয়াল) নির্মাণ করেননি। ফলে কয়েক দিনের টানা বর্ষণে মাটি নরম হয়ে সড়কের একটি অংশ ধসে গেছে। এতে দুটি গ্রামের সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে গ্রামবাসীকে বিকল্প পথে অনেকটা পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছিল।
পাকুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সাইদুর ইসলাম বলেন, “ঠিকাদারকে বারবার বলার পরও পুকুর পাড়ে সুরক্ষা দেয়াল দিতে বিলম্ব করেছিল। তাদের গাফিলতির কারণেই আজ আমাদের এই দশা। ইউএনও স্যার নিজে এসে আমাদের কষ্টের কথা শুনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।”
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ওয়াশিমুল হক বলেন,“ভারী বর্ষণের কারণে মাটি নরম হয়ে সড়কটি ধসে গেছে। পৌর প্রশাসকের নির্দেশে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে বালু ও মাটি ফেলে মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি আমরা নিজ খরচেই পুনরায় নির্মাণ করে দেবো।”
নওহাটা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী জানান,“ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি দ্রুত মেরামতের জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর জন্য পৌরসভা থেকে নতুন কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে না। সুরক্ষা দেয়ালের কাজ শেষ হলেই সড়কটির কার্পেটিং সম্পন্ন করা হবে।”
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে উপজেলা নির্বাহী ও নওহাটা পৌর প্রশাসক অফিসার আরাফাত আমান আজিজ বলেন,“খবর পাওয়া মাত্রই আমি ঘটনাস্থলে যাই, কারণ পাকুড়িয়া উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ার মানুষের সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় তাদের যে চরম ভোগান্তি হচ্ছিল, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। দুটি গ্রামের হাজারো মানুষকে বিকল্প পথে অনেকটা ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছিল, যা ছিল অত্যন্ত কষ্টকর ও সময়সাপেক্ষ। জনদুর্ভোগ লাঘব করা প্রশাসনের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব। তাই আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়ে বালু ও মাটি ফেলে একটি অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করে দিয়েছি, যাতে অন্তত মানুষের চলাচল স্বাভাবিক হয়।”
তিনি আরও বলেন,“এটি একটি অস্থায়ী সমাধান মাত্র। আমরা ঠিকাদারকে কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছি, যাতে নিজ খরচে দ্রুততম সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি মেরামত করে এবং সুরক্ষা দেয়ালের কাজ সম্পন্ন করে। এই কাজে কোনো গড়িমসি সহ্য করা হবে না। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। যত দিন পর্যন্ত সড়কটি পুরোপুরি আগের অবস্থায় ফিরে না আসছে এবং কার্পেটিং সম্পন্ন না হচ্ছে, ততদিন আমরা এর তদারকি চালিয়ে যাব। এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, তাদের ভোগান্তি স্থায়ী হবে না।

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

মোল্লাহাটে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মোল্লাহাট সদর ইউনিট কমিটি শাখা দ্বি বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

পবায় সুরক্ষা দেয়াল না থাকায় সড়কের ধস: ইউএনওর হস্তক্ষেপে চালু হলো অস্থায়ী যোগাযোগ

আপডেট সময় ০৩:০২:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫

 

ঠিকাদারের অবহেলায় রাজশাহীর পবা উপজেলায় নির্মাণকাজ চলার মধ্যেই ভারী বর্ষণে একটি সড়কের একাংশ ধসে পড়েছে। উপজেলার নওহাটা পৌরসভার পাকুড়িয়া এলাকায় দুটি পুকুরের মাঝ দিয়ে যাওয়া সড়কটি ধসে পড়ায় পাকুড়িয়া উত্তর ও দক্ষিণ পাড়া গ্রামের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন হাজারো গ্রামবাসী।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও পৌর প্রশাসক আরাফাত আমান আজিজ মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। তাঁর হস্তক্ষেপে বালু ও মাটি ফেলে অস্থায়ীভাবে সড়কটি চালু করায় এলাকাবাসীর মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।
জানা গেছে, নওহাটা পৌরসভার অধীনে ২০ কোটি টাকার প্রকল্পের আওতায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স জুয়েল ইলেক্ট্রোনিক্স এন্ড জেভি ওয়াশিমুল হক’ ১০টি সড়ক নির্মাণ করছে। ধসে পড়া সড়কটি দুয়ারী প্রাইমারি স্কুল থেকে পাকুরিয়া প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ চলমান কার্পেটিং কাজের অংশ।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সড়কটির দুই পাশে পুকুর থাকলেও ঠিকাদার সময়মতো সুরক্ষা দেয়াল (প্রোটেকশন ওয়াল) নির্মাণ করেননি। ফলে কয়েক দিনের টানা বর্ষণে মাটি নরম হয়ে সড়কের একটি অংশ ধসে গেছে। এতে দুটি গ্রামের সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে গ্রামবাসীকে বিকল্প পথে অনেকটা পথ ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছিল।
পাকুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সাইদুর ইসলাম বলেন, “ঠিকাদারকে বারবার বলার পরও পুকুর পাড়ে সুরক্ষা দেয়াল দিতে বিলম্ব করেছিল। তাদের গাফিলতির কারণেই আজ আমাদের এই দশা। ইউএনও স্যার নিজে এসে আমাদের কষ্টের কথা শুনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় আমরা তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।”
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ওয়াশিমুল হক বলেন,“ভারী বর্ষণের কারণে মাটি নরম হয়ে সড়কটি ধসে গেছে। পৌর প্রশাসকের নির্দেশে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে বালু ও মাটি ফেলে মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা করেছি। ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি আমরা নিজ খরচেই পুনরায় নির্মাণ করে দেবো।”
নওহাটা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শিব্বির আহমেদ আজমী জানান,“ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি দ্রুত মেরামতের জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর জন্য পৌরসভা থেকে নতুন কোনো অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে না। সুরক্ষা দেয়ালের কাজ শেষ হলেই সড়কটির কার্পেটিং সম্পন্ন করা হবে।”
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে উপজেলা নির্বাহী ও নওহাটা পৌর প্রশাসক অফিসার আরাফাত আমান আজিজ বলেন,“খবর পাওয়া মাত্রই আমি ঘটনাস্থলে যাই, কারণ পাকুড়িয়া উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ার মানুষের সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় তাদের যে চরম ভোগান্তি হচ্ছিল, তা কোনোভাবেই কাম্য নয়। দুটি গ্রামের হাজারো মানুষকে বিকল্প পথে অনেকটা ঘুরে যাতায়াত করতে হচ্ছিল, যা ছিল অত্যন্ত কষ্টকর ও সময়সাপেক্ষ। জনদুর্ভোগ লাঘব করা প্রশাসনের প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব। তাই আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়ে বালু ও মাটি ফেলে একটি অস্থায়ী রাস্তা তৈরি করে দিয়েছি, যাতে অন্তত মানুষের চলাচল স্বাভাবিক হয়।”
তিনি আরও বলেন,“এটি একটি অস্থায়ী সমাধান মাত্র। আমরা ঠিকাদারকে কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছি, যাতে নিজ খরচে দ্রুততম সময়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি মেরামত করে এবং সুরক্ষা দেয়ালের কাজ সম্পন্ন করে। এই কাজে কোনো গড়িমসি সহ্য করা হবে না। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। যত দিন পর্যন্ত সড়কটি পুরোপুরি আগের অবস্থায় ফিরে না আসছে এবং কার্পেটিং সম্পন্ন না হচ্ছে, ততদিন আমরা এর তদারকি চালিয়ে যাব। এলাকাবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই, তাদের ভোগান্তি স্থায়ী হবে না।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471