ঢাকা ১২:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ জুলাই ২০২৫, ৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রাজকীয় ভাবে ইমামের হেলিকপ্টারে চড়ে বিবাহের স্বপ্ন পূরণ।

  • আক্কাস আলী খান
  • আপডেট সময় ০৩:০৯:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫
  • ১৬ বার পড়া হয়েছে

রাজবাড়ী প্রতিনিধি :
ইমামতি করে টাকা জমিয়ে হেলিকপ্টারে রাজকীয়ভাবে বিয়ে করতে গেলেন রাজবাড়ীর হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী। রোববার (২০ জুলাই) দুপুরে সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের ভবদিয়া গ্রামে এমন রাজকীয় বিয়ের আয়োজন হয়। বর একই গ্রামের আবুল হোসেন ক্লাব মাঠ থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে যান ও একই মাঠে তিনি হেলিকপ্টারে করে বউ নিয়ে নামেন।

ভবদিয়ার আবুল হোসেন ক্লাব মাঠে হেলিকপ্টার অবতরণ করলে আশ-পাশের কয়েকটি গ্রাম থেকে কয়েক হাজার নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধা ভিড় জমায়। বিকেলে বর-কনে নব দম্পতি আবার ফিরে আসার সংবাদ শুনে আবারও উৎসুক জনতার ঢল নামে। এমন রাজকীয় বিয়ে দেখতে মানুষের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা কাজ করে।

বর হাফেজ মো. রুহুল আমিন সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের ভবদিয়া গ্রামের ১নং ওয়ার্ডের মোশাররফ হোসেন হেলালীর ছেলে। তিনি দাদশী মাজার জামে মসজিদের ইমামতি করেন এবং তাদের নিজস্ব একটি মাদরাসা রয়েছে।

স্থানীয় ও বরের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রুহুল আমিনের ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল হেলিকপ্টারে চড়ে সে বিয়ে করতে যাবে। এজন্য সে ইমামতি করে স্বল্প আয়ের মধ্যেও টাকা জমিয়েছিল। তার জমানো টাকা ও বাবার কিছু জমানো টাকা দিয়ে সে হেলিকপ্টারে ঝিনাইদহ জেলায় বিয়ে করতে যায়।

বর হাফেজ রুহুল আমিন বলেন, আমি ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে হাফেজি পড়া শেষ করি। যখন হাফেজি পড়া শেষ করি তখন আমার বাবা আমাকে বলেছিল যে, তুমি কি চাও? তখন আমি বলেছিলাম হেলিকপ্টারে চড়ে আমার বিয়ে করতে যাওয়ার ইচ্ছা। তখন আমার বাবা বলেছিল তোমার যে আবদার আল্লাহ তোমার মনের আশা পূরণ করবে। আমার বাবা সবসময় এ ব্যাপারে সচেষ্ট ছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি হেলিকপ্টারে চড়ে ঝিনাইদহ বিয়ে করতে যাচ্ছি। আমার স্ত্রী সেও একজন হাফেজ।

রুহুল আমিনের বাবা মোশাররফ হোসেন হেলালী বলেন, আমার ছেলে ১০ বছর বয়সে হাফেজ হয়। তখন তাকে বলেছিলাম বাবা তুমি আমার কাছে কী চাও। আমি তখন মনে মনে ভেবেছিলাম বাইসাইকেলের থেকে আর বেশি কিছু কী চাবে সে। তখন সে তার দাদা ও দাদিকে সাথে করে নিয়ে এসে আমার কাছে বলে আমি বিয়ের উপযুক্ত হলে আমাকে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে যাব। তখন আমি তাকে আশ্বাস দেই। আমার ছেলে বিয়ের উপযুক্ত হলে তখন আমি মেয়ে দেখতে শুরু করি। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে একটা মেয়ে পছন্দ হয়। পরে আমার ছেলেকে জানাই। তখন সে বলে বাবা আমি কিন্তু হেলিকপ্টার ছাড়া বিয়ে করতে যাবো না। তুমি আমাকে আশ্বাস দিয়েছিলে।

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে ইমামতি করে ৮/১০ হাজার টাকা বেতন পেয়ে থাকে। বেতনের টাকা থেকে সে প্রতিমাসে কিছু টাকা জমিয়ে রাখতো। আমার ছেলের জমানো টাকা ও আমি কিছু টাকা দিয়ে তাকে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করতে পাঠিয়েছে। আমার ছেলের মনের আশা পূরণ করতে পেরে আমি অনেক খুশি।

বরাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শামসুদ্দিন বলেন, এমন রাজকীয় বিয়ের আয়োজন এই গ্রামে আগে কখনো হয়নি।এখানে উৎসুক জনতার উপস্থিতি দেখে খুব ভালো লাগছে।

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

সংস্কারে আটকে গেছে ববির মাঠ, খেলাধুলা থেকে বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা

রাজকীয় ভাবে ইমামের হেলিকপ্টারে চড়ে বিবাহের স্বপ্ন পূরণ।

আপডেট সময় ০৩:০৯:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ জুলাই ২০২৫

রাজবাড়ী প্রতিনিধি :
ইমামতি করে টাকা জমিয়ে হেলিকপ্টারে রাজকীয়ভাবে বিয়ে করতে গেলেন রাজবাড়ীর হাফেজ রুহুল আমিন মাদানী। রোববার (২০ জুলাই) দুপুরে সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের ভবদিয়া গ্রামে এমন রাজকীয় বিয়ের আয়োজন হয়। বর একই গ্রামের আবুল হোসেন ক্লাব মাঠ থেকে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে যান ও একই মাঠে তিনি হেলিকপ্টারে করে বউ নিয়ে নামেন।

ভবদিয়ার আবুল হোসেন ক্লাব মাঠে হেলিকপ্টার অবতরণ করলে আশ-পাশের কয়েকটি গ্রাম থেকে কয়েক হাজার নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধা ভিড় জমায়। বিকেলে বর-কনে নব দম্পতি আবার ফিরে আসার সংবাদ শুনে আবারও উৎসুক জনতার ঢল নামে। এমন রাজকীয় বিয়ে দেখতে মানুষের মধ্যে উৎসাহ উদ্দীপনা কাজ করে।

বর হাফেজ মো. রুহুল আমিন সদর উপজেলার বরাট ইউনিয়নের ভবদিয়া গ্রামের ১নং ওয়ার্ডের মোশাররফ হোসেন হেলালীর ছেলে। তিনি দাদশী মাজার জামে মসজিদের ইমামতি করেন এবং তাদের নিজস্ব একটি মাদরাসা রয়েছে।

স্থানীয় ও বরের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রুহুল আমিনের ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছে ছিল হেলিকপ্টারে চড়ে সে বিয়ে করতে যাবে। এজন্য সে ইমামতি করে স্বল্প আয়ের মধ্যেও টাকা জমিয়েছিল। তার জমানো টাকা ও বাবার কিছু জমানো টাকা দিয়ে সে হেলিকপ্টারে ঝিনাইদহ জেলায় বিয়ে করতে যায়।

বর হাফেজ রুহুল আমিন বলেন, আমি ঢাকার নবাবগঞ্জ থেকে হাফেজি পড়া শেষ করি। যখন হাফেজি পড়া শেষ করি তখন আমার বাবা আমাকে বলেছিল যে, তুমি কি চাও? তখন আমি বলেছিলাম হেলিকপ্টারে চড়ে আমার বিয়ে করতে যাওয়ার ইচ্ছা। তখন আমার বাবা বলেছিল তোমার যে আবদার আল্লাহ তোমার মনের আশা পূরণ করবে। আমার বাবা সবসময় এ ব্যাপারে সচেষ্ট ছিল। আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি হেলিকপ্টারে চড়ে ঝিনাইদহ বিয়ে করতে যাচ্ছি। আমার স্ত্রী সেও একজন হাফেজ।

রুহুল আমিনের বাবা মোশাররফ হোসেন হেলালী বলেন, আমার ছেলে ১০ বছর বয়সে হাফেজ হয়। তখন তাকে বলেছিলাম বাবা তুমি আমার কাছে কী চাও। আমি তখন মনে মনে ভেবেছিলাম বাইসাইকেলের থেকে আর বেশি কিছু কী চাবে সে। তখন সে তার দাদা ও দাদিকে সাথে করে নিয়ে এসে আমার কাছে বলে আমি বিয়ের উপযুক্ত হলে আমাকে হেলিকপ্টারে চড়ে বিয়ে করতে যাব। তখন আমি তাকে আশ্বাস দেই। আমার ছেলে বিয়ের উপযুক্ত হলে তখন আমি মেয়ে দেখতে শুরু করি। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে একটা মেয়ে পছন্দ হয়। পরে আমার ছেলেকে জানাই। তখন সে বলে বাবা আমি কিন্তু হেলিকপ্টার ছাড়া বিয়ে করতে যাবো না। তুমি আমাকে আশ্বাস দিয়েছিলে।

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে ইমামতি করে ৮/১০ হাজার টাকা বেতন পেয়ে থাকে। বেতনের টাকা থেকে সে প্রতিমাসে কিছু টাকা জমিয়ে রাখতো। আমার ছেলের জমানো টাকা ও আমি কিছু টাকা দিয়ে তাকে হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করতে পাঠিয়েছে। আমার ছেলের মনের আশা পূরণ করতে পেরে আমি অনেক খুশি।

বরাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী শামসুদ্দিন বলেন, এমন রাজকীয় বিয়ের আয়োজন এই গ্রামে আগে কখনো হয়নি।এখানে উৎসুক জনতার উপস্থিতি দেখে খুব ভালো লাগছে।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471