ঢাকা ০৬:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নামে মাত্র প্রথম শ্রেণির পৌরসভা, সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত পৌরবাসীর মনে চরম ক্ষোভ

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:২৫:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫
  • ৯ বার পড়া হয়েছে

মোঃ মাসুদ রানা মনি, লক্ষ্মীপুর:
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পৌরসভাটি নামে মাত্র প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা।নিয়মিত কর প্রদান করেও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত পৌরবাসী। জানা গেছে ১৯৯১ সালে নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে রামগঞ্জ পৌরসভা গঠিত হয়। ২০০৪ সালে পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করা হয়।তখন লোক সংখ্যা ছিল প্রায় এক লাখ। দিন দিন লোক সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও পৌরসভার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পায়নি
পৌর সড়কগুলোর বেহাল দশায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পৌরবাসী। বেশিরভাগ সড়ক সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে অল্প বৃষ্টিতেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা । পৌরবাসীর অভিযোগ, নামেমাত্র পৌরসভার বাসিন্দা তারা। নিয়মিত পৌরকর দিয়েও নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত তারা।

পৌরবাসীর ঘাড়ে নিয়মিত করের বোঝা চাপলেও সে তুলনায় বাড়েনি নাগরিক সুবিধা। উল্টো প্রতিনিয়তই করের বোঝা বাড়ছে পৌরবাসীর। এতে ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়ে পড়েছে পৌর বাসিন্দারা।

স্থানীয়রা জানান, প্রথম শ্রেণির হলেও এ পৌরসভার অধিকাংশ অভ্যন্তরীণ সড়কের এখন বেহাল দশা। এসব সড়কের ইটের খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা । নির্দিষ্ট কোনো ডাস্টবিন না থাকায় যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। এতে করে ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা।
পৌরবাসীর অভিযোগ, নিয়মিত পৌরকর প্রদান করা হলেও এই পৌরসভায় দৃশ্যমান কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। কিছু কিছু জায়গায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা থাকলেও অধিকাংশ এলাকায় নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা।পৌরসভার ভেতরের রাস্তার বাতিগুলোও দীর্ঘদিন থেকে অকেজো হয়ে আছে।ফলে চুরি ডাকাতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৌরসভার টামটা এলাকার বাসিন্দা বয়োবৃদ্ধ শামছুল আলম বলেন, আমরা পৌর এলাকায় বাস করি, কিন্তু আমাদের কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। বৃষ্টি হলে সড়কে পানি জমে যায়, তখন পায়ে হেঁটে যাওয়ার কোনো উপায় থাকে না। নিয়মিত পৌর ট্যাক্স দিচ্ছি কিন্তু পৌরসভা থেকে কোনো রকম নাগরিক সুবিধাই পাচ্ছি না। না পাই সুপেয় পানি, না পাই বিদ্যুৎ। রাস্তা-ঘাটেরও বেহাল দশা। এখনতো মনে হচ্ছে পৌরসভার বাইরে যারা বসবাস করেন, তারা আমাদের চেয়েও অনেক ভালো আছেন।

পৌর শহরে চলাচলকারী একাধিক অটোরিকশা চালক জানান, শহরের বিভিন্ন সড়কের বেহাল দশার কারণে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয়। মাঝেমাঝেই রিকশার যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। যাত্রীরাও অনেক সময় রিকশায় উঠতে চান না।
২১ বছর আগে রামগঞ্জ পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসাবে রূপান্তরিত হলেও এখনও মেলে নি কাঙ্খিত নাগরিক সুবিধা। পৌরসভাটির ১৬৩ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ সড়কের মধ্যে অধিকাংশ সড়কেরই এখন বেহালদশা। সড়ক সংস্কারসহ নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধিতে পৌর কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে রামগঞ্জ পৌর প্রশাসক ও রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ জানান, ইতোমধ্যে সড়ক সংস্কারে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। তাছাড়া নাগরিক সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যেও কাজ করা হচ্ছে । তিনি পৌরবাসীকে নিয়মিত কর প্রদানের জন্য আহ্বান জানান।

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

নামে মাত্র প্রথম শ্রেণির পৌরসভা, সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত পৌরবাসীর মনে চরম ক্ষোভ

আপডেট সময় ০২:২৫:০৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ অগাস্ট ২০২৫

মোঃ মাসুদ রানা মনি, লক্ষ্মীপুর:
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পৌরসভাটি নামে মাত্র প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা।নিয়মিত কর প্রদান করেও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত পৌরবাসী। জানা গেছে ১৯৯১ সালে নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে রামগঞ্জ পৌরসভা গঠিত হয়। ২০০৪ সালে পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণীতে উন্নীত করা হয়।তখন লোক সংখ্যা ছিল প্রায় এক লাখ। দিন দিন লোক সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও পৌরসভার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পায়নি
পৌর সড়কগুলোর বেহাল দশায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে পৌরবাসী। বেশিরভাগ সড়ক সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে ভরা সড়কগুলোতে অল্প বৃষ্টিতেই দেখা দেয় জলাবদ্ধতা । পৌরবাসীর অভিযোগ, নামেমাত্র পৌরসভার বাসিন্দা তারা। নিয়মিত পৌরকর দিয়েও নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত তারা।

পৌরবাসীর ঘাড়ে নিয়মিত করের বোঝা চাপলেও সে তুলনায় বাড়েনি নাগরিক সুবিধা। উল্টো প্রতিনিয়তই করের বোঝা বাড়ছে পৌরবাসীর। এতে ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়ে পড়েছে পৌর বাসিন্দারা।

স্থানীয়রা জানান, প্রথম শ্রেণির হলেও এ পৌরসভার অধিকাংশ অভ্যন্তরীণ সড়কের এখন বেহাল দশা। এসব সড়কের ইটের খোয়া উঠে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা । নির্দিষ্ট কোনো ডাস্টবিন না থাকায় যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। এতে করে ময়লা-আবর্জনার দুর্গন্ধে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে পথচারীদের। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বাসিন্দারা।
পৌরবাসীর অভিযোগ, নিয়মিত পৌরকর প্রদান করা হলেও এই পৌরসভায় দৃশ্যমান কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। কিছু কিছু জায়গায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা থাকলেও অধিকাংশ এলাকায় নেই সুপেয় পানির ব্যবস্থা।পৌরসভার ভেতরের রাস্তার বাতিগুলোও দীর্ঘদিন থেকে অকেজো হয়ে আছে।ফলে চুরি ডাকাতি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৌরসভার টামটা এলাকার বাসিন্দা বয়োবৃদ্ধ শামছুল আলম বলেন, আমরা পৌর এলাকায় বাস করি, কিন্তু আমাদের কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। বৃষ্টি হলে সড়কে পানি জমে যায়, তখন পায়ে হেঁটে যাওয়ার কোনো উপায় থাকে না। নিয়মিত পৌর ট্যাক্স দিচ্ছি কিন্তু পৌরসভা থেকে কোনো রকম নাগরিক সুবিধাই পাচ্ছি না। না পাই সুপেয় পানি, না পাই বিদ্যুৎ। রাস্তা-ঘাটেরও বেহাল দশা। এখনতো মনে হচ্ছে পৌরসভার বাইরে যারা বসবাস করেন, তারা আমাদের চেয়েও অনেক ভালো আছেন।

পৌর শহরে চলাচলকারী একাধিক অটোরিকশা চালক জানান, শহরের বিভিন্ন সড়কের বেহাল দশার কারণে রিকশা চালাতে খুব কষ্ট হয়। মাঝেমাঝেই রিকশার যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। যাত্রীরাও অনেক সময় রিকশায় উঠতে চান না।
২১ বছর আগে রামগঞ্জ পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসাবে রূপান্তরিত হলেও এখনও মেলে নি কাঙ্খিত নাগরিক সুবিধা। পৌরসভাটির ১৬৩ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ সড়কের মধ্যে অধিকাংশ সড়কেরই এখন বেহালদশা। সড়ক সংস্কারসহ নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধিতে পৌর কর্তৃপক্ষ কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

এ ব্যাপারে রামগঞ্জ পৌর প্রশাসক ও রামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম রবিন শীষ জানান, ইতোমধ্যে সড়ক সংস্কারে বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। তাছাড়া নাগরিক সেবা বৃদ্ধির লক্ষ্যেও কাজ করা হচ্ছে । তিনি পৌরবাসীকে নিয়মিত কর প্রদানের জন্য আহ্বান জানান।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471