গাইবান্ধা প্রতিনিধি ঃ- সরকারি চাকরি নাকি সোনার হরিণ! আসলেই কি তাই। না- সরকারি চাকরি সোনার হরিণ নয়! মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সরকারি চাকরি সোনার হরিণ নয়, এমনটাই প্রমাণ করেছেন মোঃ ওসমান গনি সরকার। ২০০১ সাল থেকে ২০০৭ সালের মধ্যে পরপর চারটি সরকারি চাকরি পেয়েও ছেড়ে দেন। অবশেষে ২০১৩ সালে শেষ এবং পঞ্চম চাকরিটি গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নাজির কাম ক্যাশিয়ার পদটি মনের মত হওয়ায় তা স্থায়ী হিসেবে বেছে নেন। তিনি সারাদিন কাজের মধ্যে ডুবে থাকতে পছন্দ করেন বলেই তার কাজের স্বীকৃতি হিসেবে ২৭ জুলাই’২০২৫ তারিখে পেয়েছেন গাইবান্ধা জেলার শ্রেষ্ঠ ‘সেরা কর্মচারী’ খেতাব।
তিনি ২০১৩ সালে নাজির কাম ক্যাশিয়ার পদে চাকরিতে যোগদান করেন। তিনি প্রথমে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ভুমি অফিস ও পরে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসে চাকরি করেন। অতঃপর গাইবান্ধা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব শাখায় এক বছর ১০ মাস আগে বদলী হয়ে আসেন।
প্রতি বছরের মত এ বছরও ২০২৫ সালের জন্য গাইবান্ধা জেলা ও এই জেলার সাত উপজেলার দু’শ ৩০/৪০ জন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর তাদের কাজের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে শ্রেষ্ঠ বা সেরা কর্মচারীর খেতাব দেয়া হয়। এ বছর জেলার শ্রেষ্ঠ বা সেরা কর্মচারীর খেতাবটি অর্জন করেন উল্লেখিত গাইবান্ধা জেলার রাজস্ব বিভাগে কর্মরত নাজির কাম ক্যাশিয়ার মোঃ ওসমান গনি সরকার।
তিনি গাইবান্ধা সদর উপজেলার কুপতলা ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের মৃত. আনিছুর রহমান সরকারের পুত্র বলে জানা গেছে। এই ওসমান গনি সরকারের স্ত্রী শামছুন্নাহার বেগম একজন সুগৃহিণী। তাদের এই সুখী পরিবারে রয়েছে একটি ছেলে ও একটি মেয়ে। ছেলেটি বড় এবং মেয়েটি ছোট। ছেলে এসএম সোয়াদ বিন ওসমান গাইবান্ধা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র এবং মেয়ে সিদ্দিকা আক্তার মায়ার বয়স দুই বছর ৮ মাস।
গত ৩০ জুলাই’২০২৫ ইং তারিখে মোঃ ওসমান গনি সরকারের সাথে তার অফিসে অনেকক্ষণ কথা হয়। অনেক কথার ফাঁকে তিনি গাইবান্ধা জেলার শ্রেষ্ট বা সেরা কর্মচারী খেতাব প্রাপ্তির ছবি দেখান। তিনি বলেন গত ২৭ জুলাই ‘২০২৫ ইং তারিখে গাইবান্ধার সুযোগ্য জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জম আহমদ তাকে এই খেতাবে ভূষিত করেন। এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে জানা যায়, তিনি মেধাবী, দক্ষ, কাজের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক ও প্রজাতন্ত্রের একজন একনিষ্ঠ কর্মচারী। যা এই খেতাবটিই যথেষ্ট প্রমাণ বহন করে।
তিনি আরো বলেন- ২০১৩ সালে নাজির কাম ক্যাশিয়ার পদে যোগদান করেন। মনের মত না হওয়ায় এর আগে তিনি আরো চারটি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী পদের সরকারি চাকরি ছেড়ে দেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ২০০১ সালে নৌ পরিবহন অধিদপ্তরে, ২০০৩ সালে স্বাস্থ্য সহকারী পদে গাইবান্ধা পৌরসভায়, ২০০৪ সালে গাইবান্ধা পৌরসভায়, ২০০৭ সালে সহকারী শিক্ষক পদে গাইবান্ধা সদরের রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন। তবে উল্লেখিত সরকারি চাকরি গুলো ছেড়ে দিলেও যে কয়দিন চাকরি করেছেন প্রতিটি কর্মস্থলেই কৃতিত্বের স্বাক্ষর স্থাপন করেছেন।
সুতরাং যে সেক্টর হোক- যারা ভালো কাজ করেন বা কাজের ভাল পারফরমেন্স দেখাতে পারেন, তাদের কদর সকল সেক্টরে আছে। তার জ্বলন্ত উদাহরণ এই ‘সেরা কর্মচারী’ খেতাব।