ঢাকা ০৩:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইগাতীতে অবৈধভাবে বালু পাচার অব্যাহত, কঠোর অবস্থানে উপজেলা প্রশাসন

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৬:৪৮:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
  • ৩১ বার পড়া হয়েছে

এম,শাহজাহান, (ঝিনাইগাতী উপজেলা সংবাদদাতাঃ) শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী বিটের হালচাটি,মালিটিলা, গজারীচালা,মাগুনঝুড়া, দরবেশতলা ও ৫ নম্বর এলাকায় প্রতিরাতে লক্ষ লক্ষ টাকার অবৈধবালু পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, একটি সংঘবদ্ধ চক্র বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজের প্রত্যক্ষ প্রশ্রয়ে মাহিন্দ্র গাড়ি ব্যবহার করে নিয়মিত অবৈধবালু পাচার করছে। চক্রটির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৮–১০ জন। নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে তারা কখনো রাজনৈতিক পরিচয় আবার কখনো প্রভাবশালী নেতাদের নাম ব্যবহার করে আসছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.আশরাফুল আলম রাসেল রাতভর মাঠে থেকে অবৈধ বালু পাচার ঠেকাতে অভিযান চালাচ্ছেন। তবে প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীরা দৃঢ় অবস্থান নিলে কিছু প্রভাবশালী নেতার চাপ,হুমকি ও তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে সাংবাদিকদেরও। স্থানীয়দের অভিযোগ,অবাধে বালু পাচার চলতে থাকলে গারো পাহাড় অচিরেই নেড়া পাহাড়ে পরিণত হবে। এর ফলে শুধু পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই ধ্বংস হবে না, সরকারও হারাবে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। গজনী বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ,তিনি দায়িত্বে থেকেও দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন। সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার নিজের মতো ছুটি কাটান,আর ওই সুযোগে বালুখেকোরা অবাধে বালু লুট পাট করে নিয়ে যাচ্ছে।
শিক্ষানবিশ ফরেস্ট রেঞ্জার তহিদুল ইসলাম বলেন,আমি এই বিটে যোগদানের পর দিনরাত স্বল্পসংখ্যক স্টাফ নিয়ে লড়াই করছি প্রতিনিয়ত। ইতিমধ্যে একটি মাহিন্দ্র জব্দ করে মামলা করেছি। মালিটিলা এলাকায় বালুভর্তি গাড়ি আটকাতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। তারা আমাকে অবরোধের চেষ্টা করেছিল। এরপরেও প্রতিনিয়ত পাচারকারীদের প্রতিরোধ করে যাচ্ছি। ফলে চক্রটি আমাকে টার্গেট করে মিথ্যা অভিযোগ ও হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু কোনো হুমকিতেই আমি দমে যাব না।

রাংটিয়া রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল করিম বলেন,গজনীতে প্রতিনিয়ত বালু পাচারের সত্যতা পাওয়া গেছে। সেইকারণে আমি নিজে রাতভর মাঠে থেকে তা প্রতিরোধের কাজ করছি। বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজ খানের বিরুদ্ধে একাধিক মৌখিক অভিযোগ এসেছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন,গত কয়েক মাসে আমি ব্যক্তিগতভাবে অভিযান চালিয়ে একাধিক গাড়ি জব্দ করেছি,পাচারকারীদের কারাদণ্ড ও জরিমানাও করেছি। প্রয়োজনে আরো কঠোর হবো। পাহাড় ধ্বংসের ষড়যন্ত্রকারী বালুখেকোদের কোনো ছাড় নেই। এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রশাসন শেষ পর্যন্ত লড়াই করবো। স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে,প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও বালুখেকোদের পৃষ্ঠপোষকতার কারণে বালু পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না।

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

হাটহাজারিতে ছুরির আঘাতে নিহিত ১, গ্রেফতার -১।

ঝিনাইগাতীতে অবৈধভাবে বালু পাচার অব্যাহত, কঠোর অবস্থানে উপজেলা প্রশাসন

আপডেট সময় ০৬:৪৮:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এম,শাহজাহান, (ঝিনাইগাতী উপজেলা সংবাদদাতাঃ) শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গজনী বিটের হালচাটি,মালিটিলা, গজারীচালা,মাগুনঝুড়া, দরবেশতলা ও ৫ নম্বর এলাকায় প্রতিরাতে লক্ষ লক্ষ টাকার অবৈধবালু পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, একটি সংঘবদ্ধ চক্র বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজের প্রত্যক্ষ প্রশ্রয়ে মাহিন্দ্র গাড়ি ব্যবহার করে নিয়মিত অবৈধবালু পাচার করছে। চক্রটির সদস্য সংখ্যা প্রায় ৮–১০ জন। নিজেদের পরিচয় গোপন রাখতে তারা কখনো রাজনৈতিক পরিচয় আবার কখনো প্রভাবশালী নেতাদের নাম ব্যবহার করে আসছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো.আশরাফুল আলম রাসেল রাতভর মাঠে থেকে অবৈধ বালু পাচার ঠেকাতে অভিযান চালাচ্ছেন। তবে প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীরা দৃঢ় অবস্থান নিলে কিছু প্রভাবশালী নেতার চাপ,হুমকি ও তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে সাংবাদিকদেরও। স্থানীয়দের অভিযোগ,অবাধে বালু পাচার চলতে থাকলে গারো পাহাড় অচিরেই নেড়া পাহাড়ে পরিণত হবে। এর ফলে শুধু পাহাড়ের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই ধ্বংস হবে না, সরকারও হারাবে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব। গজনী বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজের বিরুদ্ধে অভিযোগ,তিনি দায়িত্বে থেকেও দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন। সপ্তাহে শুক্র ও শনিবার নিজের মতো ছুটি কাটান,আর ওই সুযোগে বালুখেকোরা অবাধে বালু লুট পাট করে নিয়ে যাচ্ছে।
শিক্ষানবিশ ফরেস্ট রেঞ্জার তহিদুল ইসলাম বলেন,আমি এই বিটে যোগদানের পর দিনরাত স্বল্পসংখ্যক স্টাফ নিয়ে লড়াই করছি প্রতিনিয়ত। ইতিমধ্যে একটি মাহিন্দ্র জব্দ করে মামলা করেছি। মালিটিলা এলাকায় বালুভর্তি গাড়ি আটকাতে গিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। তারা আমাকে অবরোধের চেষ্টা করেছিল। এরপরেও প্রতিনিয়ত পাচারকারীদের প্রতিরোধ করে যাচ্ছি। ফলে চক্রটি আমাকে টার্গেট করে মিথ্যা অভিযোগ ও হুমকি দিচ্ছে। কিন্তু কোনো হুমকিতেই আমি দমে যাব না।

রাংটিয়া রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল করিম বলেন,গজনীতে প্রতিনিয়ত বালু পাচারের সত্যতা পাওয়া গেছে। সেইকারণে আমি নিজে রাতভর মাঠে থেকে তা প্রতিরোধের কাজ করছি। বিট কর্মকর্তা সালেহীন নেওয়াজ খানের বিরুদ্ধে একাধিক মৌখিক অভিযোগ এসেছে। অভিযোগের সত্যতা মিললে তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন,গত কয়েক মাসে আমি ব্যক্তিগতভাবে অভিযান চালিয়ে একাধিক গাড়ি জব্দ করেছি,পাচারকারীদের কারাদণ্ড ও জরিমানাও করেছি। প্রয়োজনে আরো কঠোর হবো। পাহাড় ধ্বংসের ষড়যন্ত্রকারী বালুখেকোদের কোনো ছাড় নেই। এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় প্রশাসন শেষ পর্যন্ত লড়াই করবো। স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছে,প্রশাসন ও গণমাধ্যমকর্মীদের সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও বালুখেকোদের পৃষ্ঠপোষকতার কারণে বালু পাচার বন্ধ করা যাচ্ছে না।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471