ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি:
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে একই দিনে নিখোঁজ হয়েছে দুই শিশু। এদের মধ্যে মুক্তিপণ না পেয়ে এক শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দিয়েছে অপহরণকারীরা। শনিবার (১২ জুলাই) সকালে উপজেলার পাগলা থানার চরশাঁখচূড়া গ্রামে একটি পুকুর থেকে সিফাত হাসান (১০) নামে শিশুটির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সিফাত চরশাঁখচূড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং সৌদি প্রবাসী নূর ইসলামের ছেলে। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার দুপুরে বাড়ির পাশে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সিফাত। কিছুক্ষণ পরেই প্রবাসী বাবা নূর ইসলামের ফোনে মুক্তিপণের দাবি আসে। পরে তার ভাগ্নে জিসান অপহরণকারীদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে (০১৭৬৫-০৪৪১৫) ২ হাজার টাকা পাঠান। এরপরও ছেলেকে জীবিত ফেরত পাওয়া যায়নি।
সিফাতের মা কবিতা বেগম জানান, আমি বাবার বাড়িতে ছিলাম। সেখান থেকে ছেলের নিখোঁজ হওয়ার খবর পেয়ে ছুটে আসি। পরে জানতে পারি অপহরণকারীরা মুক্তিপণ দাবি করেছে। কিন্তু টাকা পাঠানোর পরও আমার সন্তানকে বাঁচাতে পারলাম না।
একই সময়ে নিখোঁজ হয় একই উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামের পাঁচ বছর বয়সী শিশু আইমান সাদাব। সে সৌদি প্রবাসী আল-আমিনের ছেলে। জানা গেছে, একটি দোকানে হালখাতা অনুষ্ঠানে মাইক বাজানোর শব্দ শুনে সে দোকানের সামনে গেলে সেখান থেকেই নিখোঁজ হয়ে যায়। এ ঘটনায় শিশুটির নানা সুলতান মিয়া পাগলা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
সুলতান মিয়া বলেন, আমার নাতিকে কে বা কারা নিয়ে গেছে জানি না। কেউ তাকে মেরে ফেলেছে কি না তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। প্রশাসনের কাছে আমার অনুরোধ, যেন তাকে দ্রুত খুঁজে পাওয়া যায়।
পাগলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, নিহত সিফাতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আর নিখোঁজ সাদাবকে উদ্ধারে পুলিশ সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকাজুড়ে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এলাকাবাসীর দাবি, দ্রুত অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।