ঢাকা ১১:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জোরপূর্বক কাজ করানোর সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু, এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে জোরপূর্বক কাজ করানোর সময় বৈদ্যুতিক শট সার্কিটে দগ্ধ হয়ে শিপন আহমেদ (২৭) নামের এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।অভিযুক্ত আলম ও লিপি দম্পতি পালিয়ে গেছে। নিহত শিপন পৌর শহরের জগতপুর গ্রামের আহমদ আলী বেপারী বাড়ির মৃত মন্তাজ আহমেদের ছেলে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) রাতে রাজধানীর বি এন কে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত শিপন এক সন্তানের জনক এবং তার স্ত্রীআট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ।
গত বুধবার (২০ আগস্ট) উপজেলার বালুয়া চৌমুহনী বাজারসংলগ্ন আলম ও লিপি দম্পতির বসতঘরে কাজ করার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত শিপন চৌমুহনী বাজারে আলম ও লিপি দম্পতির মালিকানাধীন একটি দোকান ভাড়া নিয়ে এসএস (স্টেশনারি) ব্যবসা করতেন। সম্প্রতি দোকান মালিক আলম ও তার স্ত্রী লিপি তাকে দোকান ছাড়ার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক বাড়ির ছাদে কাজ করতে বাধ্য করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাদের যেখানে কাজ করানো হচ্ছিল, তার ঠিক এক হাত উপরে ৪ হাজার ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক লাইন ছিল। বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ না করেই শিপনকে সেখানে কাজ করতে বাধ্য করা হয় ।
এ সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিপন ছাদেই পড়ে যান। মারাত্মক আহতাবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং সেখান অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় স্থানান্তর করেন।
বালুয়া চৌমুহনী বাজারের ব্যবসায়ী কালু মিয়া বলেন,“ঘটনার আগের দিন শিপন বলেন, ভাই, দোকানের মালিক জোর করতেছে কাজ করতে। না করলে দোকান ছেড়ে দিতে বলে। আমি বলেছি—শিপন, রিস্ক থাকলে করিস না।”
দুর্ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আলম ও লিপি দম্পতি পলাতক রয়েছেন।
নিহতের পরিবার ও আত্মীয়স্বজন শিপনের মরদেহ নিয়ে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
তারা অভিযোগ করেন,“এটা দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পিতভাবে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তার পরিবার আজ নিঃস্ব হয়ে গেল।”

শিপনের স্ত্রী মিতু আক্তার বলেন,“আমার স্বামীকে জোর করে কাজ করাতে বাধ্য করা হয়েছিল। আমার ছোট একটি সন্তান আছে, আর আমি আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমি এখন কী করব?”
রামগঞ্জ উপজেলার ডিজিএম (জোনাল ম্যানেজার) শাহিন রেজা ফরাজীকে সাংবাদিকরা ফোন করলে তিনি বলেন,“ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুন।”

রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল বারী বলেন,“ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত

রাজশাহীতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন। “সাংবাদিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ — ওসি না সরালে দুর্বার আন্দোলন”

জোরপূর্বক কাজ করানোর সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু, এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

আপডেট সময় ০৯:৩২:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫

লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধিঃ
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে জোরপূর্বক কাজ করানোর সময় বৈদ্যুতিক শট সার্কিটে দগ্ধ হয়ে শিপন আহমেদ (২৭) নামের এক যুবকের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এলাকাবাসী ও নিহতের স্বজনরা বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।অভিযুক্ত আলম ও লিপি দম্পতি পালিয়ে গেছে। নিহত শিপন পৌর শহরের জগতপুর গ্রামের আহমদ আলী বেপারী বাড়ির মৃত মন্তাজ আহমেদের ছেলে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) রাতে রাজধানীর বি এন কে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
নিহত শিপন এক সন্তানের জনক এবং তার স্ত্রীআট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ।
গত বুধবার (২০ আগস্ট) উপজেলার বালুয়া চৌমুহনী বাজারসংলগ্ন আলম ও লিপি দম্পতির বসতঘরে কাজ করার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত শিপন চৌমুহনী বাজারে আলম ও লিপি দম্পতির মালিকানাধীন একটি দোকান ভাড়া নিয়ে এসএস (স্টেশনারি) ব্যবসা করতেন। সম্প্রতি দোকান মালিক আলম ও তার স্ত্রী লিপি তাকে দোকান ছাড়ার হুমকি দিয়ে জোরপূর্বক বাড়ির ছাদে কাজ করতে বাধ্য করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাদের যেখানে কাজ করানো হচ্ছিল, তার ঠিক এক হাত উপরে ৪ হাজার ভোল্টেজের বৈদ্যুতিক লাইন ছিল। বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ না করেই শিপনকে সেখানে কাজ করতে বাধ্য করা হয় ।
এ সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিপন ছাদেই পড়ে যান। মারাত্মক আহতাবস্থায় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং সেখান অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় স্থানান্তর করেন।
বালুয়া চৌমুহনী বাজারের ব্যবসায়ী কালু মিয়া বলেন,“ঘটনার আগের দিন শিপন বলেন, ভাই, দোকানের মালিক জোর করতেছে কাজ করতে। না করলে দোকান ছেড়ে দিতে বলে। আমি বলেছি—শিপন, রিস্ক থাকলে করিস না।”
দুর্ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আলম ও লিপি দম্পতি পলাতক রয়েছেন।
নিহতের পরিবার ও আত্মীয়স্বজন শিপনের মরদেহ নিয়ে বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
তারা অভিযোগ করেন,“এটা দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পিতভাবে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তার পরিবার আজ নিঃস্ব হয়ে গেল।”

শিপনের স্ত্রী মিতু আক্তার বলেন,“আমার স্বামীকে জোর করে কাজ করাতে বাধ্য করা হয়েছিল। আমার ছোট একটি সন্তান আছে, আর আমি আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। আমি এখন কী করব?”
রামগঞ্জ উপজেলার ডিজিএম (জোনাল ম্যানেজার) শাহিন রেজা ফরাজীকে সাংবাদিকরা ফোন করলে তিনি বলেন,“ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুন।”

রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল বারী বলেন,“ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/krishanmajhee/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471