বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের (৮ম ব্যাচ) মিনহাজুল ইসলাম এক শিক্ষার্থীকে অভ্যন্তরিণ নম্বর (ইন্টার্নাল মার্ক) কম দিয়ে ফেল করানোর অভিযোগ উঠেছে ঐ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমারের বিরূদ্ধে। এ ঘটনায় তিনি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তৌফিক আলমের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন। ভুক্তভোগী বাংলা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
অভিযোগপত্রে মিনহাজুল ইসলাম উল্লেখ করেছেন, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় তুলনামূলক ভালো পরীক্ষা দেওয়া সত্ত্বেও দুটি কোর্সে (বাংলা সাহিত্য সমালোচনা ও গবেষণা-৪০২ ও জীবনানন্দ দাশের সাহিত্য-৪০৭) তিনি অকৃতকার্য হন। এছাড়াও, আরও দুটি কোর্সে তাকে কম নম্বর দেওয়া হয়েছে। পরে নম্বরপত্র উত্তোলন করে তিনি দেখেন, ৪০২ নম্বর কোর্সে অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে মাত্র ১২ এবং ৪০৭ নম্বর কোর্সে মাত্র ৭ নম্বর দিয়ে তাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফেল করানো হয়েছে। অভ্যন্তরীণ নম্বর গোপন রাখা হয়েছে এবং নোটিশ বোর্ডে প্রকাশ করা হয়নি।
তার অভিযোগ শিক্ষক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাকে ফেল করিয়েছেন। পরবর্তী ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে যখন তিনি এফ গ্রেড অপসারণ পরীক্ষায় অংশ নেন, তখনও একই শিক্ষক ব্যক্তিগত আক্রোশে তাকে পুনরায় অকৃতকার্য করিয়েছেন।
বাংলা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি কোর্সে অভ্যন্তরীণ নম্বর ৪০ থাকে। মিনহাজুল ইসলামের গ্রেডশীট এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। গ্রেডশীট পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চতুর্থ বর্ষে ভাইবাসহ মোট ১১টি কোর্সে পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে ৪০২ নম্বর কোর্সে অভ্যন্তরীণ নম্বর ১২ এবং ৪০৭ নম্বর কোর্সে মাত্র ৭ পেয়েছেন। ৪০৩ নম্বর কোর্সে রিপোর্ট থাকায় নম্বর আসেনি।
অন্যদিকে, অন্যান্য কোর্সে তার অভ্যন্তরীণ নম্বর ছিল: ৪০১ নম্বর কোর্সে ৩০.২৪, ৪০৪ নম্বর কোর্সে ২২.৫০, ৪০৫ নম্বর কোর্সে ২২, ৪০৬ নম্বর কোর্সে ২৬.৫০, ৪০৮ নম্বর কোর্সে ২০.২৫, ৪০৯ নম্বর কোর্সে ২০.৫০ এবং ৪১০ নম্বর কোর্সে ২৮.২৫।
বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীর অভিযোগ , এরকম ঘটনা বাংলা ডিপার্টমেন্টে নতুন নয়। বাংলা বিভাগে এমন ঘটনার নজির আরও অনেক আছে। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন যে শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে তাদের ভোগান্তির শিকার হতে হয় এবং এর প্রভাব পরীক্ষার নম্বরে পড়ে। কেউ এ বিষয়ে কথা বললে তাদের ওপর আরও বেশি চড়াও হন শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীরা মিনহাজের ঘটনা ছাড়াও বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে অন্যান্য দ্বন্দ্বের কারণ খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাই বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন,”আমরা সকল নোটিশ নোটিশ বোর্ডে দিয়েছি,অভিযোগকারী শিক্ষার্থী একজন ইয়ার ড্রপার। তিনি নিয়মিত ক্লাস করেন নি। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে যত পারসেন্ট ক্লাসে উপস্থিত থাকা দরকার তিনি তা থাকেন নি। একাধিক পরীক্ষা দেন নি, মিডটার্মে সাদা খাতা জমা দিয়েছেন। অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেন নি,বার বার বলার পরও দেন নি। তার সকল বন্ধু ইন্টারনাল মার্ক পরিক্ষার আগেই পেয়েছে আপনি খোঁজ নিয়ে দেখেন কিন্তু তিনি নিয়মিত ক্লাস না করলে কিভাবে খোঁজ পাবে ইন্টারনাল মার্ক পাবলিশ হয়েছে কিনা।”
এ বিষয়ে বাংলা বিভাগের চেয়ারম্যান উন্মেষ রায় বলেন,”যেহেতু অভিযোগ দিয়েছে। এখন তদন্ত করে আসল ঘটনা উদঘাটন করা হউক।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড মোহাম্মদ তৌফিক আলম বলেন, “অভিযোগের বিষয়ে আমাকে জানানো হয়েছে। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
এ বিষয়ে ববি’র পরিক্ষা নিয়ন্ত্রক সুব্রত কুমার জানান,”আমার দপ্তরে এ বিষয়ে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ আসে নি।অভিযোগ আসলে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা আমাদের যা করা দরকার।”
ববিতে উদ্দেশ্যপ্রনোদিতভাবে ইন্টারনাল মার্ক কম দিয়ে ফেল করানোর অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে
-
আবদুল্লাহ আল শাহিদ খান
- আপডেট সময় ০৩:২২:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ জুলাই ২০২৫
- ৬ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত