ঝিনাইগাতী উপজেলা সংবাদদাতাঃ) শেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার এই পাহাড়গুলো ঘিরে গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র। গারো পাহাড়ের গজনী, হালচাটি, বাঁকাকুড়া, গান্দিগাঁও এলাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে গজারি বাগানের পাহাড় কেটে ও পাহাড়ি নদী-ঝর্ণা থেকে দীর্ঘদিন থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করে আসছে এক শ্রেণির প্রভাবশালী মহল। সীমান্ত সড়কের কাছাকাছি এলাকাগুলোতে চলে গভীর রাতে বালু উত্তোলন। আর গহীন অরণ্যে দিনের বেলায় তোলা হয় বালু। রাতের অন্ধকারে ট্রলি ও পিকআপে করে উত্তোলনকৃত বালু পাচার করা হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। এভাবে প্রতি রাতে লাখ লাখ টাকা মূল্যের বালু লুটপাট করছে একদল প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৮ এপ্রিল শেরপুরের জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ধারা ৯(৪) অনুযায়ী ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের অনুমোদনের প্রেক্ষিতে শেরপুরের নালিতাবাড়ি ও ঝিনাইগাতী উপজেলা সকল বালুমহাল বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়। এরপরেও প্রভাবশালী কয়েকটি সিন্ডিকেট রাতের আঁধারে উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদী, খাল, ঝোড়া ও গারো পাহারের বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের চেষ্টা চালিয়ে আসছে।
বনবিভাগের ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া ফরেস্ট রেঞ্জে কর্মরত সহকারি বন সংরক্ষক এসডি মো. তানভীর আহমেদ ইমন জানায়, লোকবলের অভাবে বালু লুটপাট প্রতিরোধে হিমশিম খেতে হচ্ছে। জনবল বাড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। এই দিকে গজনী ও রাংটিয়া বিট অফিসে ৫ টি মাহিন্দ্র ও ৩টি ট্রলি আটক রয়েছে আটককৃত গাড়ি গুলো মামলা দেওয়া হয়েছে, ঝিনাইগাতী থানা পুলিশের অভিযানে আরও ২ টি মাহিন্দ্র আটক করা হয়েছে। ৯ জুলাই রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে অবৈধ বালুর অভিযান চালিয়ে ১ টি মাহিন্দ্র ও ২ ট্রলি আটক করেন। অবৈধ বালু পরিবহন দায়ে ড্রাইভারদের বিভিন্ন মেয়াদেভ কারাদন্ড প্রদান করেন। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দিবাগত রাত ২টা থেকে শুক্রবার সকাল ৭টা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন নদ-নদী, খাল, ছড়া ও গারো পাহারের বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল। উপজেলার সদর ইউনিয়নের বগাডুবি এলাকায় অবৈধ বালু পরিবহনের দায়ে মো. আরিফ (২০) নামের এক ব্যক্তিকে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এছাড়া ৩টি অটোভ্যান ও ১টি বালুবোঝাই মাহিন্দ্র আটক করা হয়।
এবিষয়ে শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরদার মাহমুদুর রহমান বলেন, আমরা ক্লান্ত না, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে আরো কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। অচিরেই তা দেখতে পাবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, আমাদের পরিচালিত অভিযানে বালু উত্তোলন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। সরকারি সম্পদ রক্ষার জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা ও শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। এধরনের অভিযান সব সময় চলবে
ঝিনাইগাতীর গারো পাহাড়ে রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন
-
এম.শাহজাহান
- আপডেট সময় ০১:০১:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
- ৪১ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
সর্বাধিক পঠিত